‘কুলিয়ারচরে গডফাদারদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রমরমা মাদক ব্যবসা’

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া বলেন, স্থানীয় শক্তিশালী গডফাদারদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে কুলিয়ারচরে রমরমা মাদক ব্যবসা করে আসছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এখানে করোনার চেয়েও মাদক ভয়ংকর রুপ নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মে) দুপুরে আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া তার গ্রামের বাড়ী উপজেলার পৌরশহরের মেরাতলী গ্রামে নিজস্ব বাসভবন প্রাঙ্গণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমি সব সময় কুলিয়ারচর বাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করি। অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলি। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমের আশংকা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। এ উপজেলায় করোনার চেয়েও মাদক ভয়ংকর রুপ নিয়েছে। প্রতিটা গ্রামে গ্রামে মাদকের ছড়াছড়ি। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কয়েকদিন অাগে উপজেলার বাজরা তারাকান্দি বাসস্ট্যান্ডে বসবাসরত কুলসুম নামে এক মাদক সম্রাজ্ঞী একটা ছেলেকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। একই কারণে অপর এক মহিলাকে মারধর করেছে। এ কারনে ওই মাদক সম্রাজ্ঞীকে বলেছিলাম হয় মাদক ব্যবসা ছেড়ে ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য, নয়তো এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার জন্য। এতে সে চরম উত্তেজিত হয়। মাদক ব্যবসায়ীরা স্থানীয় শক্তিশালী গডফাদারদের অাশ্রয় প্রশ্রয়ে ব্যাপক হারে মাদক ব্যবসা করে অাসছে। আমি নির্বাচনের দিন মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে বলেছিলা কুলিয়ারচর থেকে চিরতরে মাদক নির্মূল করবো। সময় এসেছে তা বাস্তবায়ন করার।

তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি আপনাদের সহযোগীতা চাই, আপনারা আমার পাশে থাকলে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় অামি কুলিয়ারচরকে মাদক মুক্ত করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। অামি অামার সর্বশক্তি দিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করে মাদক মুক্ত করবো। কুলিয়ারচরে মাদক থাকবে না। যারা মাদক নিয়ন্ত্রণ করে তারা অত্যান্ত শক্তিশালী। এটা মাদকের একটা রোড। মাদক অপরাধের জন্ম দেয়। করোনার চেয়ে মাদক ভয়ংকর। মাদক মুক্ত করতে পারলে একটা সুন্দর দেশ পাব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি স্থানে মাদক নিমূল কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছি , তারা মাদক সেবনকারীসহ ক্রেতা- বিক্রেতাদের ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় ওয়াদা করেছিলাম অামি কুলিয়ারচরে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করবো। আমি অামার বেতনের সকল টাকা ওই নিরাময় কেন্দ্রের জন্য জমা করে রাখছি। আরো যদি টাকা লাগে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিয়ে তা বাস্তবায়ন করবো।

অামি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে বলতে চাই মাদক ব্যবসা পরিচালনা পরিত্যাগ করে ভাল হয়ে যান, অামরা আপনাদের সার্বিক সহযোগীতা করবো। অার যদি মাদক ব্যবসা না ছাড়েন তবে অাপনাদের যে কোন মূল্যে অাইনের অাওতায় অানা হবে।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জাগায় ব্যানাট, ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীরা যেন প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলে তাদের স্বাগত জানিয়ে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়াসহ পূণঃবাসনের ব্যাবস্তা করে দেওয়া হবে। তার পরও যদি মাদক সেবন ও ব্যবসা চালিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংশের দিকে ধাবিত করে তাহলে তাদের নির্মূল করার জন্য আইনানুগ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে প্রশাসন ও জনগণকে সাথে নিয়ে মাঠে নেমে যা কিছু করার দরকার তাই করতে বাধ্য হবো।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউরেকা সুজ এর চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ মিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উছমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম ক্বারী, কুলিয়ারচর ডিগ্রী কলেজের সাবেক ভিপি ও সাংবাদিক মোঃ ইকবাল হোসেন, সাংবাদিক এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ্ আলম, মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, মোঃ আনোয়ারুল হক আমান, মোঃ নাঈমুজ্জামান নাঈম, মোহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম, মোঃ মাইন উদ্দিন, মোঃ নূরুন্নবী, মোঃ জুয়েল মিয়া, মোঃ নাদিম, মোছাঃ শুভ্রা, ফারজানা আক্তার, শাহীন সুলতানা ও মৌসুমী আক্তারসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


আরও পড়ুন