muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

কোন খুঁটির জোড়ে একাধিকবার দূনীতি করেও বহাল তবিয়তে?

বরগুনার বেতাগী উপজেলা মহিলা কর্মকর্তা কর্তৃক সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিতে আসা প্রশিক্ষনার্থীদের ভাতা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫২ কর্মদিবস মেয়াদী প্রশিক্ষণের ভাতা নিজের ইচ্ছে মতো রেজিস্ট্রর তৈরি করে কর্তন করেছেন বলে একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। ফলে প্রশিক্ষণে ভর্তি ইচ্ছুকদের আগ্রহী কমে যাচ্ছে ও অপরদিকে ভাতাবঞ্চিত হচ্ছেন প্রশিক্ষণ নিতে আসা সাধারণ মানুষ। এসব দূর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালসহ বার বার বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা প্রশ্নই ভেসে বেড়াচ্ছে কোন খুঁটির জোড়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

জানা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে জানুয়ারি-মার্চ এর মধ্যে বিভিন্ন ট্রেডে ৫২ কর্মদিবস মেয়াদী কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য দর্জি ট্রেড, ব্লক বাটিক ও বিউট্রিশিয়ান ট্রেডে মোট ৭৫ জনকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। জনপ্রতি প্রশিক্ষনার্থীকে প্রশিক্ষণের ভাতাবাবদ ব্লকবাটিক ট্রেডে ৬০০০ টাকা, দর্জি ট্রেডে ৬৩০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময় অনুপস্থিত দেখিয়ে ভাতা কর্তন করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোসা. শাহিনুর বেগম।

গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) এসব প্রশিক্ষণের কথা থাকলেও বেতাগী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ভাতা প্রদানে নিজের ইচ্ছে মতো অনুপস্থিত দেখিয়ে ভাতার টাকা কর্তন শুরু করে। এ সময় ভাতাবঞ্চিত একাধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কক্ষে অবরুদ্ধ করেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও ভাতা প্রদান কমিটির সভাপতি বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের সর্ম্পূন ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিলে শান্ত হন।

ব্লকবটিক ট্রেডের প্রশিক্ষনার্থী সালমা, কবিতা দর্জি ট্রেডের প্রশিক্ষনার্থী ফারজানা এবং বিউট্রিশিয়ান ট্রেডের প্রশিক্ষনার্থী নাসিমা আক্তার বলেন,‘মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা প্রত্যেকটা প্রশিক্ষণের নাম দেওয়া থেকে শুরু করে ভাতা প্রদানকালে উৎকোচ গ্রহণ করে থাকে। এ ছাড়াও এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিকবার দূনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হলেও তদন্ত আসলে দিয়ে ধামাচাপা দিচ্ছেন এই কর্মকর্তা।

বেতাগী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন খান বলেন,‘ এমন ঘুষ নেওয়ার জন্য তাকে এর আগে একবার এখান থেকে বদলি হতে হয়েছিল। কিন্তু পূনরায় একই কর্মস্থলে আসলো কিভাবে আমরা বুঝি না।’

তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, তাঁর বিরুদ্ধে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানা গেছে, অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বেতাগী উপজেলায় ৪২৫ জন উপকারভোগী ভাতা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু তিনি ওই সময় মাত্র ১৯৭ জনের ডাটা এন্ট্রি করেন। বাকিদের ডাটা এন্ট্রি না হওয়ায় ২২৮ জন উপকারভোগী এ মাতৃত্বকালীন ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্রশিক্ষণের ভাতা আত্মসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় তদন্তের জন্য অধিদফতর থেকে গত ২৯/০৯/২০১৯ খ্রি. তারিখ কারণ দর্শনোর নোটিশ প্রদান করা হলেও সেই নোটিশের কোন অগ্রগতি নেই। এসব অনিয়মের সংবাদ ওই সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

গত বিষয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ খ্রি. তারিখ) জাতীয় পতাকা অবমাননা করে টাংঙিয়েছেন। তিনি একটা ছেড়া পতাকা ঝালনার গ্রিলের সাথে বেধেঁ টাংঙিয়েছেন। ওই সময় এ খবর অনলাইন পোর্টালসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।

এ বিষয় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোসা. শাহিনুর বেগমের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে ফোন নাম্বার পরিচিত থাকায় তিনি বার বার ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজীব আহসান বলেন,‘ অভিযোগ পাওয়ার পরে করোনার প্রভাবে স্থগিত করা ৮ কর্মদিবসের ভাতা রাখা ও পরবর্তীতে সেই প্রশিক্ষন নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং বাকি কর্মদিবসের ভাতার সম্পূর্ন অর্থ প্রদান করা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগগুলো তদন্ত করে দোষী প্রমানিত হলে আইনগত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tags: