muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

প্রচ্ছদ

সরকার জনগণের গলায় ছুরি বসিয়ে টাকা আদায় করছে : রিজভী

দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কারণে শূন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল পূরণ করতে সরকার মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের গলায় ছুরি বসিয়ে টাকা আদায় করছে।

সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভিডিও কনফারেন্সে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এ সময় করোনাভাইরাস যেমন মানুষের নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেয়, ঠিক তেমনিভাবে সরকারও জনগণের শ্বাস চেপে ধরেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের চোখে সর্ষে ফুল দেখার দশা। এর ওপর ফ্যাসিবাদের অবয়ব চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, এদের আমলে দেশের টাকা পাচার হয়েছে অত্যুগ্রমাত্রায়। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের রুই-কাতলারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এরা ক্ষমতা দখল করে ১২ বছরের রাজত্বে অসংখ্য পাপুলের জন্ম দিয়েছে। ক্যাসিনো থেকে শুরু করে মানবপাচারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের পকেটে ঢুকেছে।

বিএনপি মুখপাত্র বলেন, রহস্যজনকভাবে দেশ থেকে উধাও হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকাও। ক্ষমতাসীনদের দাপটে সরকারি ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো নিয়ম-কানুন ছাড়াই ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা উড়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন দেশের আর্থিক খাত সম্পূর্ণরূপে দেউলিয়া হয়ে গেছে। এর ওপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েই যাচ্ছে সরকার। এবারেও ভাববিলাসী বাজেট বাস্তবায়ন করতে ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এতে করে ব্যাংকের বিদ্যমান তারল্য সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

রিজভী বলেন, ‘সরকার তাদের সৃষ্ট শূন্য ভাণ্ডার পূরণ করতে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের গলায় ছুরি বসিয়ে টাকা আদায় করছে।’

তিনি বলেন, করোনা মহামারীর এই প্রলয়ঙ্করী দুর্যোগের সময় সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত দায়িত্বশীল সরকার থাকলে বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে সহায়তা করা, বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতো।

‘কিন্তু নিশিরাতের সরকার সেটি না করে অবিশ্বাস্য ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল দেশবাসীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। সেই বিল জুনের মধ্যে পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ-গ্যাসের অস্বাভাবিক বিল আদায়ে দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট একটি অমানবিক দুষ্টচক্র কাজ করছে’ যোগ করেন রিজভী।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস যেমন মানুষের নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেয়, ঠিক তেমনিভাবে সরকারও জনগণের শ্বাস চেপে ধরেছে। সরকার এতোটাই নির্বিবেক ও বেপরোয়া যে, হরিলুট হওয়া সরকারি অর্থের ঘাটতি পূরণে গরীব মানুষের শরীর থেকে রক্ত টেনে নিচ্ছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার চলছে হুকুমবাদের মনোভাব ও বাধ্যকরণের নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে। তাদের আর একটি প্রধান নীতি হচ্ছে জনগণকে বশ মানাতে বলপ্রয়োগ করা।

তিনি বলেন, সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে গ্রামে গ্রামে নীরবে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশই এখন কভিড-১৯ ভাইরাসের দখলে। ঢাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ ও বিপজ্জনক।

রিজভী বলেন, এই সরকার দেউলিয়া হওয়া অর্থনীতি সচল রাখার জন্য স্বল্প আয়ের মানুষদের মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। বর্তমান দুর্নীতি-বান্ধব সরকার দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, করোনার আঘাতে দেশের বেহাল দশা ও প্রায়-দুর্ভিক্ষাবস্থা ঠেকাতে ‘কোড অব সাইলেন্স’ প্রয়োগ করছে।

‘এজন্য দমনমূলক আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারের দ্বারা র‍্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা মেশিনারি দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ রাখা হচ্ছে। অসহায় মানুষকে নীরবে সইতে হচ্ছে ক্ষুধা ও জুলুমের যন্ত্রণা’ যোগ করেন তিনি।

Tags: