muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আইন আদালত

সেই শুকুর আলীর ফাঁসি স্থগিত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে সাবিনা (১৩) নামের এক কিশোরীকে ধর্ষণ-হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড বহালের আসামি শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর আপাতত স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এবং কারা কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আসামি শুকুর আলীর আইনজীবীকে প্রক্রিয়া মেনে রিভিউ আবেদন করতে বলেছেন আদালত।

রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে শুকুর আলীর পক্ষে শুনানি করেন হেলাল উদ্দিন মোল্লা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন।

পরে আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, গত ১৮ আগস্ট আপিল বিভাগ শুকুর আলীর ফাঁসি বহাল রাখেন। এ মামলায় অপর তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগের রায়ের অগ্রিম অর্ডার পেয়ে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন খারিজ করে দেন।

হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগের কথা আমাকে জানানো হয়। তখন আমি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ও রিভিউ আবেদন দায়ের করার কথা বলি। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে তো ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে না। এরপর রিভিউ আবেদনের সুযোগও আসামিকে দিতে হবে। আমি আদালতে এসব কথা বলেছি। পরে আপিল বিভাগ শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে বলেছেন।

গত ১৮ আগস্ট কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে ওই শিশুকে ধর্ষণ-হত্যার অভিযোগে আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আপিল বিভাগ। তিন আসামি নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া তাদের কনডেম সেল থেকে স্বাভাবিক সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের ওই শিশু প্রতিবেশীর বাড়িতে টেলিভিশন দেখে ফেরার পথে আসামিরা তাকে অপহরণ করেন। এরপর লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাক ক্ষেতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে শিশুটিকে তারা হত্যা করেন। পরদিন তার বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলার বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন।

আসামিরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের খয়ের আলীর ছেলে শুকুর আলী, আব্দুল গনির ছেলে কামু ওরফে কামরুল, পিজাব উদ্দিনের ছেলে নুরুদ্দিন সেন্টু, আবু তালেবের ছেলে আজানুর রহমান ও সিরাজুল প্রামাণিকের ছেলে মামুন হোসেন।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এরমধ্যে কামু ওরফে কামরুল মারা যান। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর আসামিরা আপিল করেন।

Tags: