muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

দুই যুগ পর সম্মেলন, তাতেও ‘অনিয়ম’

যে সম্মেলন হওয়ার কথা তিন বছর পর পর, সেটি হচ্ছে ২৫ বছর পর। তাতেও অভিযোগ উঠেছে, গঠনতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না মেনে সম্মেলন আয়োজনের। যার ফলে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কথা, সেটির বদলে বিরাজ করছে হতাশা।

শুক্রবার (২০ মে) সকালে জেলা শহরের আখরাবাজারস্থ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

আগামী ২৫ মে সম্মেলন সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক হোসাইন এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তবে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জোবায়ের।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২৫ বছর আগে ১৯৯৭ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে শুধুমাত্র সভাপতি হিসেবে এডভোকেট আতাউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক শরীফ সাদীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও তৎকালীন জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে অনুমোদনহীন কমিটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পরে ২০০৩ ও ২০১৪ সালে সদরের ১১টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হলেও সেসব কমিটিরও অনুমোদন দেননি আতাউর রহমান ও শরীফ সাদীর নেতৃত্বাধীন কমিটি।

এতে আরও বলা হয়, ১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সালের করা ইউনিয়ন কমিটিগুলো গঠনতন্ত্র পরিপন্থী এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো যে কাউন্সিলর তালিকা করছে সেই তালিকা বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ মে সম্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশন করা গঠনতান্ত্রিক বিধানে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তারা।

জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর প্রতি ইঙ্গিত করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২৫ মে সম্মেলনকে সামনে রেখে বর্তমান উপজেলা কমিটির সভাপতি ও ‘কথিত’ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেলা কমিটির এই নেতার বশংবদ হিসেবে ১১ ইউনিয়নে একটি অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা প্রনয়ণ করেছেন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন বর্ধিত সভা করা হয়নি। কাউন্সিলর তালিকা ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছেও দেওয়া হয়নি। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান যাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মাফিক ‘আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া আছে, তাকেও কাউন্সিলর রাখা হয়নি।

মারিয়া, লতিবাবাদ, বৌলাই, দানাপাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকরা জানেন না তাদের ইউনিয়নের কী তালিকা করা হয়েছে এবং তালিকায় তাদের নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সৈয়দ টিটুর খেয়ালখুশি মত তালিকা প্রস্তুত করে সেটাও গোপনে রাখা হয়েছে বলে জানান তারা। ফলে সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে যে উৎসাহ উদ্দীপনা থাকার কথা তার ছিটেফোটাও নেই, বরং আছে হতাশা ও ক্ষোভ। এমতাবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান।

এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল, দানাপাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিবাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম, মারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, রশিদাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলাল মিয়া, মহিনন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক তৌহিদ, কর্শা কড়িয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাকুল, মাইজকাপন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Tags: