muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

রাজনীতি

৬২ দিন কোথায় কোন ঘরে তাকে আটক করে রাখা হয়েছিল?

salauddin pic
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ যে ঘরে বন্দী ছিলেন ৬২ দিন সেই ঘরটি কোথায়- তা জানার আগ্রহ জনতার। একটি নির্জন স্থানে নাকি তাকে বন্দী রাখা হয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে চোখ বেঁধে শিলং রেখে আসা হয়।

কিন্তু ৬২ দিন কোথায় কোন ঘরে তাকে আটক করে রাখা হয়েছিল সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি। কারা তাকে আটকে রেখেছিল সে বিষয়েও মুখ খোলেননি তিনি। গতকাল মেঘালয় গোয়েন্দা পুলিশ সালাহউদ্দিন আহমেদকে প্রায় ২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে এ তথ্য দিয়েছেন তিনি। সালাহ উদ্দিনের সাথে দেখা করে আসা লোকজনের বরাত দিয়ে বিবিসি গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

মেঘালয়ের শিলং টাইমসহ ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কয়েকজন আত্মীয় সালাহ উদ্দিনের সাথে দেখা করেছেন শিলং সিভিল হাসপাতালে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির সহকারী অফিস সেক্রেটারি আব্দুল লতিফ জনি দেখা করেছেন। শুক্রবারও সালাহউদ্দিনের সাথে তার দুজন আত্মীয় দেখা করেছেন। তারা তাকে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাক এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত শিলং সিভিল হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শিলং টাইমস গতকাল এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ঢাকা ও কলকাতা থেকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক শুক্রবার শিলং পৌঁছেছেন। তারা সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে দেখা করতে চাইলেও সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে গিয়ে বিএনপির এক নেতা অফিস সেক্রেটারি আব্দুল লতিফ জনি দেখা করেছেন।

বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো প্রায় ২ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মেঘালয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন যে, তাকে কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল প্রায় দুই মাস।

তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে সালাহউদ্দিন আহমদের দু’জন আত্মীয় দুপুরে তার সাথে দেখা করে খাবার আর পোশাক দিয়ে এসেছেন।

তার সাথে কথাবার্তাও হয়েছে তাদের। ওই আত্মীয়রা জানান, ৬২ দিন তিনি বন্দী অবস্থায় কাটিয়েছেন। কোথায় ছিলেন সেটা বলতে পারেননি তিনি। তারপর চোখ বেঁধে বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে তাকে নিয়ে আসা হয় শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায়।

সেটা সালাহউদ্দিন আহমদ নিজেই খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন। শিলং পুলিশ যদিও এতদিন দাবি করে আসছিল, তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সালাহউদ্দিন আহমদকে হেফাজতে নেয়। তবে সালাহউদ্দিন আহমেদ এ দিন আত্মীয়দের জানিয়েছেন, তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।

শিলং টাইমস গতকাল সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে দীর্ঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির সহকারী অফিস সেক্রেটারি আব্দুল লতিফ জনি সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎ শেষে তিনি শিলং টাইমসকে জানান, তিনি বিএনপি নেতা হিসেবে তার সাথে দেখা করতে আসেননি। পরিবারের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তাদের অনুরোধে এসেছেন। জনি জানান, সালাহউদ্দিন আহমদের শরীরের অবস্থা বেশি ভালো নয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ তাকে বলেছেন, অন্য হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো দরকার। কারণ তার হার্ট ও কিডনির সমস্যা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি ওষুধ সেবন করে আসছিলেন বলে জানান। এখানে তার যে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

আব্দুল লতিফ জনি শিলং টাইমসকে জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী শিলং আসতে চাচ্ছেন। কিন্তু তিনি এখনো ভিসা পাননি। তিনি এলে পরে সালাহউদ্দিনের ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শিলং টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইবেন কিনা সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে আব্দুল লতিফ জনি এ বিষয়ে জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

Tags: