muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কৃষি

চিরিরবন্দরে ধান কাটা শ্রমিক সংকট থাকায় কৃষক দিশেহারা

এস.এম.নুর আলম, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ।। দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে উপজেলায় শ্রমিক সংকটে থাকায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এ ছাড়া ঝড়-বৃষ্টির ও বজ্রপাতের কারণেও ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শ্রমিক সংকটের কারণে ধানের বাম্পার ফলনের পরও স্বস্তিতে নেই কৃষকদের। কিন্তু শ্রমিকের অভাবও অতিরিক্ত মজুরির কারণে তা কাটতে পারছেন না কৃষকরা। অন্যদিকে আবারও বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। ব্যাপকহারে ইরি-বোরো চাষে বিগত বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে কৃষক দিশেহারা। এ কারণে ইরি-বোরো বাম্পার ফলনেও কৃষকদের মুখে হাসি নেই। যে সব স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, তাদের দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে।

পুনট্টি ইউনিয়নে বাবু পাড়া গ্রামের কৃষক মেহেরুল বলেন, শ্রমিক সংকটের মধ্যেও কিছু শ্রমিক পাওয়া গেলে তারা কৃষকদের উল্টো নানা শর্ত জুড়ে দেয়। তারপরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধান কেটে শ্রমিকরা খেতেই রেখে দিচ্ছে। ওখান থেকে আলাদা শ্রমিক দিয়ে বাড়িতে কাটা ধান এনে মাড়াই করতে হচ্ছে। আর বম মেশিন দিয়ে মাড়াই করতে প্রতি একরে লাগছে ১৫-১৬শ’ টাকা।

সাঁইতাড়া ইউনিয়নে পলাশবাড়ী জোব্বার বলেন, ধান কাটতে একজন কামলা দিনে ৫০০-৬০০ টেহা দুই বেলা খাওন দিয়ুন লাগে। তাও কামলা পাওয়া যায় না। খেত লইয়া হ্যারা মুসকিলে আছি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা গেছে, চিরিরবন্দর ইরি-বোরোর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। তবে ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় কৃষকের মুখ মলিন হয়ে পড়েছে। কাল বৈশাখীর সাথে মুসলধারায় বৃষ্টিপাতে মাঠের পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কষ্টের ফসল সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে না পারায় শঙ্কায় ভুগছে। পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাবের মধ্যে নিরুপায় হয়ে উচ্চদরে শ্রমিক মিলছে অল্প পরিমানে। অনেকেই উচ্চ মূল্যে শ্রমিক নিতে না পারায় ফসল কাটতে পারছেন না। কিন্তু সংকট দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের। মজুরি কম থাকায় এ বছর শ্রমিকেরা ধান কাটতে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। চিরিরবন্দর থেকে অনেক শ্রমিক ধান কাটার উদ্দেশ্য দ্রুতযানে সান্তাহার, আবাদপুকুর, আক্কেলপুর, নওগাঁ,নাটোর ধান কাটার জন্য যাচ্ছে। এজন্য চিরিরবন্দর ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দেয় এবং গৃহস্থরা বিপাকে পড়েছে।

চিরিরবন্দর থেকে দ্রুতযানে সান্তাহারে যাওয়ার ধান কাটা শ্রমিক মমেদুল, মোজাম্মেল, হাসেনুর, আজিজুল, শামীমদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, চিরিরবন্দর বিঘায় ৩৮০০-৪,০০০ টাকা। কিন্তু সান্তাহারে বিঘায় ৪,৫০০-৫,০০০ করে ধান কাটা। যদি সেখানে বেশি হয় তাহলে আমরা ক্যানো যাব না।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মাহমুদুল হাসান জানান, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা প্রচন্ড পরিশ্রম করে কৃষকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করেছেন। এ পর্যন্ত কৃষকেরা যে পরিমাণ ধান ঘরে উঠতে পেরেছেন ফলন খুবই ভালো হচ্ছে। কিন্তু মাঠের শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে কৃষকরা একটু সমস্যায় পড়েছেন।

Tags: