muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আবহাওয়া ও জলবায়ু

মাঘের শীতে কাঁপছে তেঁতুলিয়া

কথায় আছে মাঘের শীতকে বাঘেও ডরায়। প্রায় প্রতিবছরই শীতের এই মৌসুমে ওই প্রবাদের সত্যতা টের পায় দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের প্রান্তিক মানুষজন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মাঘের এই মধ্যভাগে ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে সেখানে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায়ও জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ্ জানান, সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার সকাল ৯টায় রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন মঙ্গলবার রেকর্ড হয়েছিল ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয়রা জানায়, গতকাল তাপমাত্রা কমা ও তীব্র হিমেল বাতাসে রাত এবং ভোরে শীতের অনুভূতি হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে রাতে শীত যেন অনেক গুণ বেড়ে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারিতে পঞ্চগড়ে দেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছিল।

তেঁতুলিয়া উপজেলার শীতার্ত মানুষ জানায়, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই সেখানে শুরু হয়েছে হিমেল বাতাস। রাত বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে শীত। অবস্থা এমনই যে, ঘরের মেঝে, বিছানা, দরজা স্পর্শ করলে যেন হাত-পা অবশ হওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। রাতভর ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঝরেছে শিশির। টিনের চালে টপটপ শব্দে শোনা যায় শিশির পড়ার আওয়াজ। গতকাল ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গোটা জনপদ ছিল ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন। এর মধ্যেই বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় শীত নিবারণে নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ছিন্নমূলসহ নিম্নবিত্ত মানুষ।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকেই তেঁতুলিয়া তথা গোটা পঞ্চগড়ে চলছে শীতের তা-ব। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত রোগব্যাধি। সর্দি, জ্বর, কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মহামারী পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানতে রোগীদের পরামর্শ দিতে দেখা যায় হাসপাতালের ফিজিও থেরাপির চিকিৎসক ডা. এসএম শামীমকে।

এদিকে শীত কাঁপন ধরালেও জীবিকার তাগিদে ঘরে বসে নেই নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রতিদিনের মতো গতকালও ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে কাজ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন পেশার মানুষগুলোকে। তারা কেউ যাচ্ছেন নদী মহানন্দায় পাথর তুলতে, কেউ চা বাগানে, কেউ দিনমজুর হয়ে গেরস্থের ক্ষেতে। কর্মজীবী নারীরাও ছুটছেন পাথরের সাইটে কাজ করতে। পরিবারের কথা চিন্তা করেই জীবিকার তাগিদে শীতের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তারা।

Tags: