মনির হোসেন রবিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
হাউক্কাটি (স্যাঁকো) পার হতেই মনে ডর (ভয়) লাগে । আমি এখান দিয়ে (পথে) স্কুলে যাব না। একবার পানিতে পড়ি গেছি। আবার কখন পা পিছলে সাঁকো থেকে খালে পড়ে যাই এই ডরে (ভয়) আছি। অন্য জায়গা দি (দিয়ে) স্কুলে যেতে দূর লাগে। হেয়ারলাই (সেজন্য) এই হাউক্কা (স্যাঁকো) ডরে ডরে (ভয়ে ভয়ে) স্কুলে যাই।
কাঞ্চনপুর গ্রামের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া আক্তার এ কথাগুলো বলছিলেন। তারপরও সব ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে যাতায়াত করে সে। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার কাঞ্চনপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ড ও বামনী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে খালের উপর সাঁকোটি অবস্থিত।
স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট আদায় করে নিলেও ব্রিজটি নির্মাণ হয়নি স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরেও। কা নপুর, বামনী, শিবপুর, কেরোয়া, সাইচা ও পৌর এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াত প্রতিদিন একমাত্র এ বাঁশের স্যাঁকোটি। প্রায় সময়ই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও পথাচারী দুর্ঘটনার স্বীকার হন।
১৪ মে রোববার সকালে মোঃ শাহাজাহান, শহীদ পাটওয়ারী ও আলী হোসেন পিংকুসহ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ খালের উপরে ৪০ বছর আগে গ্রামবাসী এ স্যাঁকোটি নির্মাণ করেন। কয়েকমাস পর পর ভেঙ্গে গেলে তা আবার নির্মাণ করে দেন। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচন আসলে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর খবর থাকে না। স্যাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন ১০টি স্কুল, তিনটি কলেজ ও পাঁচ গ্রামের শিুশু-বৃদ্ধসহ কোমলমতী ছাত্র-ছাত্রীরা চলা-চল করছে। প্রায় সময় খালে পড়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে আহত হয়। বিকল্প পথে শহরে যেতে হলে গ্রামবাসীদের প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার রাস্তা বেশী হেঁটে যাতায়ত করতে হচ্ছে।
বামনীর ইউপি সদস্য নাজির হোসেন বাবুল বলেন, ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেও কোন লাভ হচ্ছে না। আপনারা সাংবাদিকদের লেখায় যদি ব্রিজ হয় তাহলে উপকৃত হবে গ্রামবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্যাঁকোটির স্থানে ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্রিজটি নির্মান করে দেওয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/১৫-০৫-২০১৭ইং/ অর্থ