muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

রাজশাহীর পথশিশুদের ঈদ আনন্দ

পাপন সরকার শুভ্র, রাজশাহী প্রতিনিধি ।।

আজ পালিত হহচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহা। সবাই খুব আনন্দের সহিত পপালন করছে ঈদ। শুক্রবার বিকাল ৫টা। রাজশাহী রেল স্টেশনে অলস সময় কাটাচ্ছে কয়েকজন শিশু। কাছে যেতেই কেমন ভয় পেয়ে উঠলো তারা। জানতে চাইলে তাদের একজন সপাটে, বলে উঠলো তার নাম আলম (১০)। বাড়ি নগরীর ভদ্রা এলাকায়। সে স্টেশনে বেলুন বিক্রি করে। ঈদের কথা বলতেই আলম বলে, ‘মামা আমার একটা প্যান্ট আছে। আর একটা শার্ট মামা দিয়েছে। খালি এক জোড়া স্যান্ডেল বাকি আছে। প্যান্ট কাল ৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি। আর মামা ৬০ টাকা দিয়ে শার্ট কিনে দিয়েছে। কেউ টাকা দিলে স্যান্ডেল কিনবো। এসব পরে আনন্দ করবো। ঘুরবো স্টেশনে।

এরপর কথা হয় চাঁদনি সাড়ে ১০ বছর। বাড়ি আবদুলপুর ও বরিশালের সেলিনার (১১) সঙ্গে।

চাঁদনি বলে, তার বাবা অন্য এক জয়গায় বিয়ে করেছে। এখন আছে সৎ বাবা। সে বলে, ‘মা-বাবা চট্টোগ্রামে মাংস খুটকে (ভিক্ষা করা) গেছে। তারা ঈদের পরে আসবে। টাকা আর মাংস লিয়ে আনবে। ঈদের কিছু কিনিনি। কেউ দেওনি।’

সেলিনা বলে, ‘বাবা মারা গেছে। মা বিয়ে করেছে। এক মামা চুনু (স্নো) কিনি দিয়েছে। আর কাপুর নাই আমার। ঈদে কেউ কিছু কিনে দেয়নি।

তারপর কথা হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরের আরিফ (১১) নামে এক শিশুর সঙ্গে। সে বলে, ‘মা-বাবা বাড়িতে থাকে। মা অন্য এক জায়গায় বিয়ে করেছে। আর বাবাও পরে বিয়ে করেছে। বাড়িতে আমি যায় না।
গেলে বাবা মারে। তাই আমি এখানেই থাকি। একটা প্যান্ট কিনেছি ৫০ টাকা দিয়ে। কেউ যদি গেঞ্জি ও স্যান্ডেল কিনে দেয় তাহলে ঈদ ভালোই হবে।’

আর এক পথ শিশু মো. মারুফ (১১) বলে, ‘ মা মারা গেছে। বাবা বিয়ে করেছে। আমি ক্লাস ফাইব (পঞ্চম শ্রেণি) পর্যন্ত পড়েছি। বাড়ি যেতে ভালো লাগে না। বাবা তেমন খেতে দেয় না। তাই এখানে থাকি। আর হোটেলে কাজ কাম করি। বেলুন বিক্রি করি। কিছু কিনিনি তো। ঈদের দিন শহরে ঘুরে বেড়াবো।’

ঈদের কেনা-কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ইব্রাহিম (১৪) বলে, কাল তো বছরকারা দিন। কিছু কিনিনি।
ইব্রাহিমকে একজন লোক একটা শার্ট কিনে দিয়েছে। সেই শার্টে তার ঈদ হবে। তবে এরই মধ্যে পরনের জামাটা মারামারি করতে গিয়ে এক ছেলে ছিঁড়ে দিয়েছে। এ দিয়েয় আজ কাটবে ইব্রাহীমের ঈদ আনন্দ।

পথ শিশু হৃদয় (১০) বলে, ‘মামা শুনেছি। কয়েক দিন আগে নাকি। জামা দিয়ে গেছে স্টেশনে। আমি পাইনি। আমি ছিলাম না। এসে শুনছি। বেলুন বিক্রি তেমন নাই। আর টাকার জন্যও বেলুন কিনতে পারিনি। যে টাকা ছিল সব খেয়ে নিয়েছি। ঈদে এখানেই থাকবো।

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/০২-০৮-২০১৭ইং/ অর্থ

Tags: