muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশের পাশে থাকবে

ডেস্ক রিপোর্ট ।। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের। চলমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা সফররত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যদূত ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাজ্য বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে, খাবার দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ আলাপ-আলোচনা ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় ১৭ কোটি মানুষ বাস করে। এর ওপর বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা। বাংলাদেশ দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চায়। ব্রিটিশ সরকার এ বিষয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে আছে জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেওয়া ইবিএম (এভরিথিং বাট আর্মস) এর আওতায় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করছে বাংলাদেশকে। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের জন্য এ বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে, তখনও ব্রিটেন বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতির কারণে অনেক দেশ বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। এখন যেকোনো দেশ বাংলাদেশে শতভাগ বিনিয়োগ করতে পারে এবং যেকোনো সময় লাভসহ মূলধন ফিরিয়ে নিতে পারে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সরকার আইন করে সংরক্ষণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগ করতে পারেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যদূত রুশনারা আলী বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন, হত্যা ও দেশত্যাগে বাধ্য করায় যুক্তরাজ্য সরকার, পার্লামেন্ট এবং ব্রিটিশ জনগণ নিন্দা জানিয়েছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাবার দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জন্য এটা বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্রিটেন বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, মা ও শিশুর মৃত্যুহার হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। ব্রিটিশ রেলওয়ে কোম্পানি বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০ বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেরে মধ্যে ব্যবধান অনেক। বাংলাদেশ বরাবরই একটি সম্ভাবনাময় দেশ। শিক্ষা, অবকাঠামোসহ সব সেক্টরেই বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্য আন্তরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশ থেকে কার্গো উড়োজাহাজ চলাচল আবার চালু হবে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার কাজ করছে। এখানকার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ব্রিটিশ কোম্পানি কাজ করছে। অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ আবার চলাচল শুরু করবে।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ডিরেক্টর রোজিনা হাসান, ডেপুটি ডিরেক্টর সুরাইয়া জাহানসহ বাংলাদেশে সফররত বিভিন্ন ব্রিটিশ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tags: