আন্তর্জাতিক রিপোর্ট ।। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও এর সদস্য দেশগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইইউ’র পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সিলের বৈঠকে ২৮ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে মোট আটটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে ইইউ বলেছে, রাখাইন রাজ্যে মানবিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি শোচনীয়। সেখানে ধারাবাহিকভাবে গোলাগুলি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সহিংসতা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর অবসান হওয়া প্রয়োজন।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সহিংসতা ও আতঙ্কের কারণে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যখন বিপুলসংখ্যক মানুষ দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়, তখন বুঝতে হবে সেখানে সংখ্যালঘুদের বের করে দেওয়ার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ইইউ বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য না করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে, জাতিসংঘ, আইসিআরসিসহ সব আন্তর্জাতিক বেসরকারির উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে রাখাইনে শর্তহীন পূর্ণ প্রবেশাধিকার দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। যারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে, তাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে আনার বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তব প্রক্রিয়া চালুর দাবিও জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সামঞ্জস্যবিহীন বলপ্রয়োগের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান কমান্ডার ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের ইইউভুক্ত দেশগুলোর কোনো প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় আমন্ত্রণের বিষয়টি বাতিল করা হবে। দেশের ভেতরে নিপীড়নে ব্যবহার করা যায়, এমন অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামের ওপর বর্তমানে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাও বহাল রেখেছে ইইউ। পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ২০ থেকে ২১ নভেম্বর নাইপিদুতে অনুষ্ঠেয় আসেমের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে মিয়ানমার সরকার ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে চায় ইইউ ।