এম নজরুল ইসলাম, বগুড়া ।। বাঙালির ঐতিহ্য নবান্ন উৎসব গ্রামাঞ্চলে এখনো বহমান। নতুন ধানের চালের পায়েস, নতুন ভাত, নতুন সবজি আর বড় মাছ দিয়ে জামাই আপ্যায়ন করার জন্য বগুড়া জেলার শেরপুর, কাহালু, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর, সারিয়াকান্দি, শিবগঞ্জ, সোনাতলা, আদমদীঘি, গাবতলী, দুপচাঁচিয়াসহ প্রতিটি উপজেলার গ্রামা ল গুলোতে কৃষকরা ঘরে ঘরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে নবান্ন উৎসবে মেতেছে। নবান্ন উৎসব ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। বগুড়ার মহাস্থানে এই উদ্দীপনায় নতুন করে যোগ হয়েছে বড় মাছের মেলা। অগ্রহায়ণ মাস মানেই বাংলা উৎসবের সাথে মিশে থাকা বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐহিত্য ও সংস্কৃতি। অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই গ্রামবাংলায় চলে নানা উৎসব-আয়োজন। নতুন ধান কাটা আর সেই সাথে প্রথম ধানের ভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসব। কৃষকের ঘর ঘরে ভরে উঠেছে গোলাভরা ধান।
বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে বিরাট মৎস্য মেলার আয়োজন করেছে মহাস্থানহাট মাছ ব্যবসায়ী সমিতি। মাছ বাজারে প্রবেশ গেট নির্মান সহ পুরো মাছ বাজরে আলোক সজ্জায় সর্জ্জিত করা হয়েছে।
মহাস্থান মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি হায়দার আলী জানান, আমরা প্রতি বছর ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মাছের মেলা করে থাকি। এখানে দুর দুরান্ত থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা দেশী ও বিদেশী বড় বড় মাছ আমদানী করে মাছ বিক্রি করে থাকে। মেলা বসানোর কোন জায়গা নেই। সরকারী ভাবে মেলার জায়গা পেলে আমরা বড় পরিসরে এ মেলা লাগাতে পারতাম। জায়গা স্বল্পতার কারণে বড় পরিসরে মাছ বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়েছি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ১ সপ্তাহ আগে থেকে সাজানো হয়েছে এই হাট। শনিবার ভোরবেলা থেকে আসতে শুরু করে বিরল প্রজাতির বিচিত্র সব সৌখিন মাছ। দুপুরের দিকে ক্রেতাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাজারে শুধু যে ক্রেতাদেরই ভীড় তা নয়, অনেকে বড় মাছ দেখার জন্য ছুটে এসেছেন। গত বারের চেয়ে এবার মাছের দাম একটু কম এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের কৃষকরা তাদের পঞ্জিকা অনুসারে ১লা অগ্রহায়ণ থেকে নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে। এই নিয়মের ধারাবাহিকতায় কৃষকদের ঘরে ঘরে চলছে এখন ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব।