muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

প্রাণের স্পন্দনে কামারজানী মার্চেন্টস স্কুলের হীরক জয়ন্তী উৎসব

মোঃ মেহেদী হাসান, গাইবান্ধা ।। গাইবান্ধায় বর্ণাঢ্য এবং বর্ণিল আয়োজনে সদর উপজেলার কামারজানী মার্চেন্টস উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে হীরক জয়ন্তী উদযাপিত হয়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার এ উৎসবকে ঘিরে হাজারো প্রাণের প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যোগদেন এই মিলনমেলায়।
এদিন সকাল থেকেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ আশেপাশের এলাকায় ছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে হাজারো প্রাণ যেন এক লক্ষ্যে ছুটছিল বিদ্যালয়ের দিকে। উদ্দেশ্য প্রাণের উৎসবে অংশগ্রহণ।
এরপর সকাল ৮টায় বিদ্যালয় মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্কুল ঘণ্টা বাজানোর সাথে সাথে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠ শেষে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ফিতা কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। পরে পায়রা মুক্তকরণ, ফেস্টুন উড়ানো, শোকপ্রস্তাব জ্ঞাপন করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি কামারজানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নাচেগানে মেতে উঠেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
আনন্দ শোভাযাত্রাটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে উদ্বোধনী পর্বের আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো. ফারুকুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. এনায়েত হোসেন, কামারজানী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম জাকির, গিদারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর রশিদ ইদু। অনুষ্ঠানে ৭৫ বছর পূর্তির হীরক জয়ন্তী ফলক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি বিদ্যালয়ের সাফল্য কামনার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সকলের পরিশ্রমের ফলে আজকে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলা রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ এখন একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এখন বাংলাদেশকে রোল মডেল রাষ্ট্র বলা হয়। অন্যান্য দেশ বাংলাদেশকে এখন অনুসরণ করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ এমন সুন্দর আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। সভাপতির বক্তব্যে মো. ফারুকুল ইসলাম উপস্থিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন এবং উৎসব সফলে সকলের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন।
উৎসব আয়োজনের উদ্বোধনী পর্বের পর ছিল স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ব্যাচ অনুসারে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়। রফিকুল ইসলাম তারার সভাপতিত্বে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ইউনুস আলী, গাইবান্ধা বক্ষ্যব্যাধী হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আব্দুল জলিল সর্দার, মেডিকেল অফিসার ডা. ভজন কুমার সাহা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা জাহেদুল হক সর্দার, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ফজলুল হক, আব্দুল করিম, রেবতী মোহন রায়, শাহ মোহাম্মদ ফজলুল হক, আব্দুল মালেকসহ আরও অনেকে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন কিশোর পলাশ, মুনিয়া মুন, সুভাষ চন্দ্র মল্লিক, তমাসহ স্থানীয় শিল্পীরা।
এসময় অত্র প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণসহ সর্বস্তরের জনতা উপস্থিত ছিলেন।

Tags: