muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

পিবিআই’র তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন রিনা

একাধিক স্ত্রী-সংসার, সন্তান ও মেয়ে জামাই থাকতেও পাসপোর্ট কর্মকর্তার প্রতারণার বিয়ে এবং হত্যা চেষ্টার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন বগুড়া সদরের উপ-শহর কাঁচা বাজার এলাকার রিনা পারভীন। জেলা বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং (১) আদালতে চলতি বছরের ২৩ মে মামলা (নং ১২০ পি/২০১৮) দায়ের করা হয়। সেই মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়া জেলা অফিসে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত। তদন্তভার গ্রহন করেন পিবিআই এর এসআই মনিরুজ্জামান, বিপি নং-৮৭১৪১৬৭১১৩। মামলার আসামি প্রতারক খোরশেদ আলমের (পাসপোর্ট কর্মকর্তা) কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মামলার বিপক্ষে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মামলার বাদি রিনা পারভীন।

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে রিনা পারভীন বলেন, বগুড়া পাসপোর্ট কর্মকর্তা (এডি) খোরশেদ আলম আমাকে ২০১৬ সালের ২ জুন তারিখে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল ঘাটেরপার (বালুপাড়া) তেলীহারা এলাকার কাজী শফিকুল ইসলাম শফিকের মাধ্যমে কাবিননামা ও রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে করে। আমি গর্ভবতী হলে স্বামী খোরশেদ আমার গর্ভপাত ঘটায়। এরপর আমার স্বামী আমাকে না জানিয়ে কর্মস্থল বগুড়া থেকে বদলি হয়ে মাগুরা জেলায় দ্বায়িত্বে থাকাকালেও খোরশেদ ১৫ দিন পর পর বগুড়া আসতো। সে হঠাৎ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে আমি অসহায় হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলাম। আমার স্বামী খোরশেদ আলমের খোঁজে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আমি মাগুরা জেলার পাসপোর্ট অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে খোরশেদ এর সাথে দেখা হওয়া মাত্রই সে আমার কাছে যৌতুক হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবী করে। সেই টাকা দিতে আমি অস্বীকৃতি জানালে খোরশেদ আমাকে বেধরক মারধর করে পাসপোর্ট অফিস থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক আগারগাও ঢাকা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করি। এতে খোরশেদ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। এঘটনায় গত ৭ মার্চ বগুড়া সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। গত ৬ এপ্রিল খোরশেদ আমার বাসায় এসে যৌতুকের দাবীকৃত ১০ লাখ টাকা আবারো দাবী করে। কেন সে এমন করছে জানতে চাইলে, খোরশেদ আমাকে মারধর করে এবং হত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন আমাকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করে। খোরশেদ এর তালবাহানা আর যৌতুকের কারণ খুঁজতে গিয়ে আমি জানতে পারি, খোরশেদ আমার সাথে প্রতারণা করে বিয়ে করেছে। আমার পূর্বেও সে আরো একাধিক বিয়ে করেছে। তাদের সন্তান রয়েছে, মেয়ে জামাইও আছে। খোরশেদ ভুয়া ঠিকানা আর পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করেছে। খোজ নিয়ে জেনেছি, ঢাকার মধ্য পেয়ারাবাগ, শান্তিনগর এলাকায় খোরশেদ আলম বসবাস করে। তার পিতার নাম মৃত মফিজুল হক। সম্প্রতি খোরশেদ শেরপুর জেলায় পাসপোর্ট কর্মকর্তা (এডি) হিসেবে বদলী হয়। সেখান থেকেও তাকে বদলী করে বর্তমানে হেড অফিসের কর্মস্থলে রেখেছে। সংবাদ সম্মেলনে রিনা পারভীন বলেন, আমি ন্যায় বিচারের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়া জেলা অফিসে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত। মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করেন পিবিআই এর এসআই মনিরুজ্জামান। তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে মামলা তুলে নেয়া সহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান। মোটা অংকের টাকা দাবি করেন, অন্যথায় আমার দায়ের করা মামলা দুর্বল করারও হুমকি দেয়। এছাড়াও আমার স্বামী প্রতারক পাসপোর্ট কর্মকর্তার সাথে টাকার বিনিময়ে দফারফা করে মামলা তুলে নিতে বলেন। পিবিআই কর্মকর্তার হয়রানির বিষয়ে গত ০৮/০৭/২০১৮ইং তারিখে আমি বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফোন এবং টেলিফোন নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এটা কারা করছে আমি জানিনা। ফোন করে আমাকে ঢাকাতেও ডাকা হচ্ছে। পরিবার সহ আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমার প্রতারক স্বামী খোরশেদ বগুড়া পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত থাকাকালে দুই (২) দুই কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে। আমি এটা প্রকাশ করায় খোরশেদ আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এরই মধ্যে আসামি খোরশেদ আলমের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গত ১৭/০৯/১৮ ইং তারিখে আদালতে আমার মামলার বিপক্ষে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। মামলার তারিখের দিন ১৯/০৯/১৮ইং আমি আদালতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি এবং প্রতিবেদন মিথ্যা মর্মে না-রাজী দিয়েছি। খোরশেদ আলমের একাধিক মোবাইল ফোন নম্বর রয়েছে। কিভাবে একটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে খোরশেদ আলমের বগুড়া অবস্থান করেননি বলে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই কর্মকর্তা। আমার টাকা নেই বলে ? আমি গরীব বলে সুষ্ঠু বিচার পাব না ? আমারমত মেয়ে কি কারো ঘরে নেই ? পিবিআই কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। গত ৬ এপ্রিল খোরশেদ আমার বাসায় এসে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। স্বাক্ষীদের সাক্ষী, হাসপাতালের সার্টিফিকেটেও কি মিথ্যা ? খোরশেদ ঘটনার দিন আমাকে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যাবার সময় তার পাসপোর্ট অফিসের আইডি কার্ড ফেলে গেছে। সেটাও কি মিথ্যা বলবেন পিবিআই কর্মকর্তা ? সংবাদ সম্মেলনে রিনা পারভীন অভিযোগ করেন, আমাকেই উল্টো হয়রানী করা হচ্ছে। আমি চরম বিপাকে পড়েছি। আমি প্রতারক খোরশেদ আলমের বিচার চাই। পুনরায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবী করছি। আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও প্রশাসনের উর্ধতন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ এবং সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

Tags: