চলতি সপ্তাহে শুরু হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন। জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী প্রতিরোধের লড়াইকে মনোযোগের কেন্দ্রে রেখে এই অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন বিশ্ব নেতারা। তাদের সবাই করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিলেও ব্যতিক্রম শুধু ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো।
বরাবরই করোনার টিকা বিরোধী এই নেতা এবার জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন টিকা না নিয়েই। গত সপ্তাহে তিনি ঘোষণা করেছেন, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরে এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে, তাই তার টিকা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
এদিকে, জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশন যেন করোনার ‘সুপার স্প্রেডার ইভেন্টে’ পরিণত না হয়, সেজন্য বিশ্ব নেতাদের এবারও নিউইয়র্ক আসতে নিরুৎসাহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যদিও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এবার সশরীরে অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম সশরীরে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন বাইডেন।
জাতিসংঘে এবারের অধিবেশনে তথাকথিত একটি ‘অনার সিস্টেম’ও থাকছে। সেই অনুযায়ী যিনিই অধিবেশন হলে ঢুকবেন তাকেই টিকাপ্রাপ্ত বলে ধরে নেওয়া হবে, কোনো অতিথির কাছ থেকে এ বিষয়ক কোনো প্রমাণপত্র চাওয়া হবে না।
কিন্তু অধিবেশনে প্রথম দেশ হিসেবে ব্রাজিল যখন বক্তব্য দেবে, তখনই মূলত এই ‘অনার সিস্টেম’ ভেঙে পড়বে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী এই প্রেসিডেন্ট হয়তো তার মত পরিবর্তন করতে পারেন, এমনটা আশা করছে জাতিসংঘ। তার জন্য জাতিসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে নিউইয়র্ক শহর কর্তৃপক্ষের একটি ভ্যান থাকবে, যেখানে সপ্তাহব্যাপী বিনামূল্যে শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের কোভিড টিকা দেওয়া হবে।
মহামারীর কারণে গত বছর সশরীরে অধিবেশনে দিতে পারেননি বিশ্বনেতাদের কেউ। তার পরিবর্তে ভিডিও কনফারেন্স মাধ্যমেই অধিবেশনে নিজেদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হয়েছিল তাদের। এবারের অধিবেশনেও যে সবাই আসছেন- এমন নয়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের এক তৃতীয়াংশ এবারও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। সশরীরে উপস্থিত থাকবেন বাকি দুই তৃতীয়াংশ দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।