সৎভাইয়ের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে জীবন্ত পুঁতে রাখার এক বছর পর আলমগীর হোসেন (৪৫) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের পশ্চিম রামদেব গ্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। মৃত আলমগীর হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের সিরাজুল মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আলমগীরের মায়ের জমি জবর দখল করে ভোগ করছিল তার সৎভাই খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার। যা নিয়ে মাঝে মনোমালিন্য চলছিল। এরই জের ধরে আলমগীরকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় আলমগীরকে কৌশলে আদিতমারী উপজেলার পশ্চিম রামদেব গ্রামে নিয়ে আসেন ভাই খেলান, আব্দুস সাত্তার ও সাত্তারের ভায়রা (শ্যালিকার স্বামী) পাবনার রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ড্রাইভার। এরপর পশ্চিম রামদেব গ্রামের আশরাফ আলী চোর ও সেকেন্দার আলীর হাতে ন্যস্ত করেন তারা। সেখানে আলমগীরকে কোল ড্রিংসে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়। এরপর আলমগীর ঘুমিয়ে পড়লে রামদেব গ্রামের আশরাফ চোর ও সেকেন্দার আলীর বাড়ির পেছনে একটি বাঁশঝাড়ের গর্তে তাকে জীবন্ত পুঁতে ফেলে চক্রটি।
এ দিকে আলমগীরের কোনো খোঁজ না পেয়ে তার পরিবার কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। এর দুই মাস পরে একে একে খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার মারা যান।
সম্প্রতি আব্দুস সাত্তারের ভায়রা পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার নিখোঁজ আলমগীরের পরিবারকে ফোন করে হত্যার ঘটনাটি প্রকাশ করেন। অবশেষে এ ঘটনায় নিহত আলমগীরের আপন ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার এবং আদিতমারীর রামদেবের আশরাফ চোর ও সেকেন্দার আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
আটক রাশেদ ড্রাইভারের দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার বিকালে রামদেব গ্রামে বাঁশঝাড়ের গর্ত খুঁড়ে আলমগীর হোসেনের দেহাবশেষ উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আটকদের দেয়া তথ্যমতে গর্ত খুঁড়ে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।