muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

কিশোরগঞ্জে নতুন জেলা কারাগার নির্মাণে দুর্নীতি

কিশোরগঞ্জে নতুন জেলা কারাগার নির্মাণে দুর্নীতি অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হুছাইনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বরাবরে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তিনিও কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।

গত ১৪ জুলাই কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলামও কিশোরগঞ্জে এসে নির্মাণাধীন কারাগার পরিদর্শন করে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নতুন কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার উদ্বোধন না হওয়ায় ২৪৫ বন্দি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পুরানো কারাগার এখন মানুষের গুদামে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৩০০ বন্দি এ কারাগারে অবস্থান করায় তাদের পালাক্রমে বিশ্রাম নিতে ও ঘুমাতে হয়। দুর্বিষহ গরম আবহাওয়ার কারণে জীবন রক্ষায় এ কারাগার থেকে ময়মনসিংহ কারাগারেও স্থানান্তর করতে হচ্ছে অনেক বন্দিকে।

তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালনকারী গণপূর্ত বিভাগের দাবি, কাজের বিপরীতেই টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে, শিগগিরই উদ্বোধনের জন্য হস্তান্তর করা যাবে এ কারাগার।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান জেলা কারাগারে স্থান সংকুলান হওয়ায় ১৯৯৯-২০০০ সালের অর্থ বছরে মারিয়া ইউনিয়নে ২৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় নতুন এ কারাগারের জন্য। তবে ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এর সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় ৬৮ কোটি ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে এ কারাগার প্রকল্পের কাজ। ১৭ বছরে বিভিন্ন ধাপে ১৫ শত বন্দি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন এ কারাগারের নির্মাণের কাজ পায় সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অবশেষে কারাগার নির্মাণে দীর্ঘ হাওয়া লাগলেও ৩০ শতাংশ কাজ বাকি রেখেই জুন ক্লোজিংয়ে প্রকল্প কাজ সমাপ্তের ঘোষণা দিয়ে গণপূর্ত বিভাগ বরাদ্দের ৭৯ কোটি টাকা তুলে দেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাতে। ভবন নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার এবং বালি ও সিমেন্টের পরিমাণে গরমিল ছাড়াও ফাঁকি-ঝুঁকির মাধ্যমে এখন এ প্রকল্প কাজের ইতিটানার তোড়জোড়ের অভিযোগ তদন্ত কমিটিতে প্রমাণিত হয়।

গত ৬ জুলাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হুছাইনের নেতৃত্বে জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদসহ ৫ সদস্যের গঠিত কমিটি সরেজমিনে নতুন কারাগার পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে কমিটির পক্ষ থেকে ৩২টি সুনির্দিষ্ট ত্রুটি ও ঘাটতি উল্লেখ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে গত ১০ জুলাই একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

কিশোরগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমজুল হক জানান, দীর্ঘদিন মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার পর প্রকল্প কাজ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কারাগারের নির্মাণ কাজ বাকি নেই। এখন রং করা এবং ধুয়ামোছার কাজ চলছে। সেই কারণেই সমুদয় বিলও পরিশোধ করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও তদন্ত কমিটির প্রধান আলমগীর হুছাইন জানান, মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিলের পর কাজের গতি বাড়লেও এ মাসে উদ্বোধন সম্ভব হবে বলে মনে করছি না।

Tags: