সব লাল রংই তো আর হৃদয়ের রং নয়, কিছু লাল বেদনার ও তো হয় “ঠিক এই কথাটিই মনে করিয়ে দেয় এই শিশুটি। দেখতে বেশ ভালো গোছালো আর পরিপাটি হলেও জীবন খুব একটা গোছানো নয় তার। পথে পথেই মানুষ। এদের ঠিক পথশিশু বিশেষন নয়, এদের বিশেষায়িত করতে হবে পথ সৈনিক শব্দটি দিয়ে।
এদের মৌলিক অধিকার গুলোই ঠিকমত মেলে না, শুধু মাত্র বাঁচার প্রয়োজনেই বেঁচে থাকা। কখনো বা ঠাঁই মেলে কোথাও, আবার কখনো বা খোলা আকাশের নিচে বিছানা করতে হয়।
সভ্যতা বলতে এরা বুঝে কাউকে সাহেব বলে ডাক দেয়া, কোনো অপরিচিত জনকে সম্মান দেখানো, কাউকে সালাম দেয়া। জীবনের টানে, সবাই কে সমীহ করে এরা! কিন্তু পাওয়া বলতে খুব একটা থাকেনা কিছুই।
নাম তার অলক (ছদ্মনাম)। ওর কাছে যেতেই কি সুন্দর হাসি! মনেই হয়না জীবনে ওর গ্লানি বলতে কিছু রয়েছে। মুখে হাসি নিয়ে অকৃত্রিম সুরে বলছে ” ভাই একটা আইসক্রিম কিন্না দিবেন ” এমন বলা যে কারো হৃদয় ছুঁয়ে যাবে,উজার করে দিতে চাইবে সব কিছু। এই আইসক্রিমটাই ওর জীবনের বড় একটা অর্জন মনে হচ্ছিলো। ভোগবাদী সমাজের মানুষকে বাড়ি গাড়ি দিয়েও হয়তো এমন হাসি ফোটানো যাবে মুখে।
একটা মানুষ পৃথীবির জন্য অনেক বড় সম্পদ। একটা মানুষকে কাজে লাগিয়ে পৃথীবি তার রুপ বদলে পারে। আর সেই মানুষই অবহেলায় রাস্তায় পড়ে থাকে। অথচ এই মানুষ টাকে পরিচর্যা করতে পারলে মানবসম্পদে রুপান্তরিত করা সম্ভব। এ ভাবে যেন অনাদরে কেউ পড়ে না থাকে।
অনাদর আর অবহেলায় জীবনের প্রতি টান কমে যায় এসব পথ সৈনিকের। এদের ছোট্ট চাওয়া গুলোকে আমরা পাওয়াতে রুপান্তর করতে পারি। একটু ভালো ব্যবহার আর অল্প কিছু খাবার দিয়েই। এরাই জীবন সৈনিক, এরাই লড়তে জানে জীবনের সাথে। পথকেই ঘর করে। তাই এদের পথ শিশু না বলে পথ সৈনিক বলাই সমীচিন।
জীবনকে এরাই খুব কাছ থেকে দেখে। এরাই সংগ্রাম করে টিকে থাকে, এদের মত শিশুরাই পথ থেকে বেড়ে ওঠে সমাজ পরিবর্তনের ডাক দিতে পারে, তাই অবহেলা নয়, এ জীবন সৈনিকদের যুদ্ধ সহজ করে দেওয়াই আপনার আমার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
সোহাগ মনি
গণ-যোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগ (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)