অবশেষে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ। বুধবার কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুল্লাহর আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুল ইসলাম।
বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ এ তথ্য জানান।
অভিযুক্তরা হচ্ছে- জেএমবির শীর্ষ নেতা মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, অনোয়ার হোসেন, সোহেল মাহমুদ, রাজীব গান্ধী ,মো. আনোয়ার হোসেন ও ঘটনাস্থল থেকে আটক জাহিদুল হক তানিম। বর্তমানে তারা কারাগারে আছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ৫ আসামির বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দেয়া হয়। ঘটনার পর শোলাকিয়া ও ঢাকার হলি আর্টিসান হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গির আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সারাদেশে শুরু হয় অভিযান। আটক করা হয় শীর্ষ জঙ্গিদের। বর্তমানে পুলিশের হাতে আটক পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
তিনি জানান, মামলার মোট আসামি ছিল ২৪ জন। তাদের মধ্যে ১৯ জন মামলার তদন্ত চলার সময় বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অভিযোগপত্রে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বিভিন্ন সময় নিহত অপর ১৯ আসামিকে অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। হলি আর্টিসান ও শোলাকিয়া হামলায় একটি জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত ছিল। শোলাকিয়া মাঠের ইমাম ও মুসুল্লিদের হত্যা করাই ছিল হামলার উদ্দেশ্য। কিন্তু নিরাপত্তা চৌকিতে বাধা পেয়েই তারা সেখানে হামলা চালায়। বর্বরোচিত এ হামলায় জড়িত এবং অর্থ ও অস্ত্রের জোগানদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন জামাত শুরুর কিছু আগে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গিরা। বোমা আর গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে শোলাকিয়া ময়দানের আশপাশ। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের দুই কনস্টেবল ও এক গৃহবধূ। হামলার সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে নিহত হয় আবির রহমান নামে এক জঙ্গি। আহত অবস্থায় আটক করা হয় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক জঙ্গিকে। পরে সেও মারা যায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে। ২০১৬ সালের ১০ জুলাই কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। অবশেষে চা ল্যকর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো