ইনজুরির মিছিলে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ম্যাচের আগে থেকেই ইনজুরিতে জর্জরিত দল। সাকিব, তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত। দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান ইনজুরিতে। ম্যাচের আগে জানা গেলো, ইনজুরি মুশফিকেরও। শেষ পর্যন্ত, সাকিব, তামিম এবং মুশফিক- তিন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে নিয়েই মাঠে নামলো বাংলাদেশ।
মাঠে নামার পরেরটা যেন পুরোটাই স্বপ্ন। ইনজুরির ওপর ইনজুরিতে পড়ে তামিমের মাঠ ছাড়া, মালিঙ্গার একের পর তোপে দিশেহারা হয়ে পড়া বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে মুশফিক-মিঠুনের ১৩১ রানের অবিশ্বাস্য জুটি, মুশফিকের অসাধারণ এক সেঞ্চুরির পর শেষ মুহূর্তে সবাইকে অবাক করে দিয়ে তামিমের মাঠে নামা এবং মুশফিকের বীরোচিত ব্যাটিং- সব কিছুই যেন সত্যি সত্যি এক স্বপ্ন।
সেই স্বপ্নের বাতায়ন খুলে শেষ পর্যন্ত, এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে টিম বাংলাদেশ। তামিম-মুশফিক-মিঠুনদের গড়ে দেয়া ভিতকে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছেন বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বাংলাদেশের মাশরাফি, মোস্তাফিজ, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন কিংবা সাকিব আল হাসান।
ভাঙা হাত নিয়ে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল যেভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সাহসের সঞ্চার করেছেন, সেটাই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ের ক্ষেত্রে বিশাল এক অনুপ্রেরণা তৈরি করে দিলো। সেই অনুপ্রেরণা নিয়েই শুরু থেকে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের ওপর চেপে বসে বাংলাদেশের বোলাররা।
বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ২২ রানে মোস্তাফিজের বলে কুশল মেন্ডিস আউট হওয়ার পর থেকে বিপর্যয় শুরু লঙ্কানদের। ২৭ রান করা উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে মাশরাফি একটা বার্তা দিয়ে দেন।
২৮ রানে ২, ৩২ রানে ৩, ৩৮ রানে ৪, ৬০ রানে ৫, ৬৩ রানে ৬ এবং ৬৯ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। ২৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক লঙ্কানদের উইকেট হারানো জয় ত্বরান্বিত হয় বাংলাদেশের।
শুরুতেই ঝড় তুলেছিলেন মোস্তাফিজ এবং মাশরাফি। তাদের সঙ্গে পরে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং রুবেল হোসেনরা। একটি আবার রানআউটও হয়েছে।
লঙ্কানদের কোনো ব্যাটম্যানকেই দাঁড়াতে দিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছিলেন উপুল থারাঙ্গা। মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। ১৬ রান করেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার উইকেট তুলে নেন রুবেল হোসেন। ১১ রান করেছিলেন কুশল পেরেরা। তার উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
থিসারা পেরেরা ছিলেন শেষের শঙ্কা। কিন্তু তাকে সরাসরি বোল্ড করে মোস্তাফিজ প্রমাণ করলেন তারাও অনেক দুর এগিয়ে গেছেন। তিনি করেন মাত্র ৬ রান। অন কোনো ব্যাটসম্যানও দাঁড়াতে পারেননি। দুই অংকের ঘর স্পর্শও করতে পারেননি। মাশরাফি, মোস্তাফিজ এবং মিরাজ নেন ২টি করে উইকেট। রুবেল নেন ১ উইকেট।