কিশোরগঞ্জ জেলার পৌর এলাকায় এক ভয়ংকর কিশোর সামাউল হক নিলয় (১৯), পিতা- মোঃ কাজল মিয়া, মাতা- শিউলী আক্তার, সাং-নীলগঞ্জ মোড়, লালু বাড়ীর গলি, থানা ও জেলা-কিশোরগঞ্জ।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় ২ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী রয়েছে। শান্তিতে জীবনযাপন করছিলেন সকল সাধারণ মানুষ। কোনো রাজনৈতিক হানাহানিসহ এমনকি আধিপত্যের দাপট নিয়েও কোন ঝগড়া-ঝাটি হয়নি। গত রোজার সময় থেকে হঠাৎ মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয় একদল কিশোরের ভয়ংকর আচরণ দেখে। গত ১৬/০৩/২০১৮ হঠাৎ মুখোশধারী একদল কিশোর রাস্তায় এলোপাতারী হামলা করে সাধারণ মানুষের উপর। এতেই সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। তারপর ১০/০৪/২০১৮ রাজাকে হত্যা করে মুখোশধারী একদল কিশোর। আবার ৩১/০৭/২০১৮ ডিজিল্যাব হেলথ কেয়ারের জেনারেল ম্যানেজার বাচ্চু মিয়াকে মুখোশধারী লোকেরাই এলোপাতারী কোপায়। গত ১১/০৯/২০১৮ তারিখে শোলাকিয়ার নীলগঞ্জ মোড় থেকে কানিকাটা পর্যন্ত দোকানপাটসহ এলোপাতারীভাবে কোপায়- এইসব কর্মকাণ্ডের হোতা সামাউল হক নিলয় (১৯)। তাকে পুলিশ ১১/০৯/২০১৮ পুলিশ ঈদগাহ রোড রেলক্রসিং থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ২ দিনের রিমান্ডে সে স্বীকারোক্তি দেয় যে, তার গ্রুপে সমবয়সী একশ’র বেশি কিশোর নেশাগ্রস্থ হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারীভাবে হামলা চালায়। মানুষ ভয় পেলে তাদের আনন্দ বেড়ে যায়। নেশার টাকা বাবা-মার কাছ থেকে কৌশল করে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় কোন উদ্দেশ্য ছাড়ায় ভয়ংকর অ্যাকশনে যায়। কখনও তার বন্ধুদের সাথে কোন ঝগড়া-ঝাটি হলে সকলে সংঘবদ্ধভাবে হামলা করে। সিসি ফুটেজে দেখা যায় রাজা হত্যার সময় ১৬/১৭ জন কিশোর মুখোশ পরে আনন্দের সাথে কোপাচ্ছে। রাজা হত্যার পর তাদের সাহস আরো বেড়ে যায়। এখন তারা বেপরোয়া। শহরের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা তাদের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
এলাকাবাসী বলেন, আজকে যদি কথা বলি তবে কালকে আমার ছেলেকে রাজার মত পরিণতি হতে পারে। এমনকি আমার ঘরটিও তাদের আক্রমণের শিকার হতে পারে।
এই বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা মোঃ ইকবাল হায়াত বলেন, পুলিশ তাদের সাধ্যমত সন্ত্রাস নির্মূল ও কিশোর অপরাধীদেরকে ধরার চেষ্টা করছে। কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি দরকার। আমাদের পুলিশের একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ইতোমধ্যে সানি, পিয়াস, সোহাগসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা বর্তমানে জেল হাজতে আছে। ২২/০৯/২০১৮ তারিখ রাত ১২.৪৫ মিনিটে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৌলাই রাজকুন্তি বৌলাই বাজার থেকে সোহাগ (২৪), পিতামৃত- মহরম মিয়া, সাং- নিউটাউন, মাহমুদুর রহমান (২৪), পিতামৃত- মাহবুবুর রহমান, সাং- উত্তর রাজকুন্তি, হৃদয় (২০), পিং- ইদ্রিছ মিয়া, সাং- তেরহাসিয়া, বৌলাই এই তিন জনকে ১৯৫ পিছ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও পুলিশের অভিযান চলছে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে। নিলয়কে আবারো রিমান্ডে এনে তাদের গ্রুপের সকলের আস্তানা ও ইয়াবার আসরকে নস্যাৎ করার জন্য পুলিশের অভিযান অবিরত চলতে থাকবে।