রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হাওরবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি আপনাদের সাথে দেখা করার জন্য এসেছি। আপনারা আমাকে ভালবাসেন, আমিও আপনাদেরকে ভালবাসি।’
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ মাঠে নাগরিক কমিটি আয়োজিত তাকে দেওয়া গণসংবর্ধনায় বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি হাওরের ভৌগলিক অবস্থানের বর্ণনা দিতে গিয়ে আরও বলেন, দীর্ঘ ৪৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আপনাদের ভালোবাসা আমাকে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছে। আপনাদের ঋণ আমি কোনোদিন ভুলব না। হাওরের শিকড়ের কথা ভুলেন না বরং জীবনভর এ হাওর ও এলাকার মানুষদের নিয়ে চিন্তা করতেন। এ জন্য এখন শুধু দেশে নয় বিদেশেও এ হাওরকে তিনি নতুনভাবে পরিচিত করিয়েছেন।
ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘হাওরের প্রধান ফসল ধান। এক সময়ে হাওরে ধান কাটার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক আসতো। এখন তাদের জীবনমানের উন্নতি হওয়ায় তারা আর সেভাবে আসে না। এতে হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা যায় তবে দেশে ধান কাটার প্রযুক্তি এসেছে। হাওরের একটা সমস্যা হলো, ধান কাটার সময় জমিতে পানি থাকে। এখন এমন প্রযুক্তিও তৈরি হয়েছে যে জমিতে কাদা থাকলেও ধান কাটা যায়। এছাড়া ড্রাই মেশিনে ধান শুকানোও যায়। এসব প্রযুক্তিগুলো আমাদের-আপনাদের কাজে লাগাতে হবে।’
হাওরে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হবে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রতিটি হাওর থেকে বাড়িতে ফসল নিয়ে আসার জন্য কৃষকের সুবিধার জন্য সাবমার্সেবল রাস্তা করে দেয়া হচ্ছে। হাওরের এসব রাস্তায় ট্রাক্টর কোনোভাবেই যেন চলাচল করতে না পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. ইসমাঈল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আফজাল হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে পাঁচ দিনের হাওর সফরের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার সকালে বড় ছেলে ও কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের চালানো প্রাইভেটকারে চড়ে অষ্টগ্রাম থেকে নোয়াগাঁও ও অষ্টগ্রাম-কাস্তুল-ভাতশালা রাস্তার কাজ পরিদর্শন করেন।
পরে হেলিকপ্টারযোগে তিনি ইটনায় পৌঁছান। সেখানে তাঁকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে তিনি বিকেলে উপজেলার চারটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন।
পাঁচ দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি এখন ইটনা সফর করছেন। বুধবার সকাল ১১টায় রাষ্ট্রপতি ইটনা উপজেলার ইটনা-জিলা রোড পরিদর্শন করবেন। সফরের তৃতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক কলেজ মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।