শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের শেষ বলে বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। ফাইনালে ভারত জিতেছে ৩ উইকেটে।
স্কোর:
বাংলাদেশ ৪৮.৩ ওভারে ২২২
ভারত: ৫০ ওভারে ২২৩/৭
রিভিউ নিয়ে জাদেজাকে ফেরাল বাংলাদেশ
রিভিউ নিয়ে রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ। কট বিহাইন্ডের আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি আম্পায়ার। বাংলাদেশ নেয় রিভিউ। রিপ্লেতে দেখায় যায়, মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়ার আগে জাদেজার ব্যাটের কানা ছুঁয়েছিল বল। ৩৩ বলে ২৩ রান করে ফেরেন জাদেজা। ভারতের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ২১২। জয়ের জন্য ভারতের ১৬ বলে দরকার ১১, বাংলাদেশের ৪ উইকেট।
মাঠ ছাড়লেন যাদব
হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় ভুগছিলেন বেশ কিছুক্ষণ ধরেই। ঠিকমতো দৌড়াতে পারছিলেন না কেদার যাদব। মাশরাফির বল তার পায়ে লেগে চার হওয়ার পর অবশ্য আর উইকেটে থাকতে পারলেন না মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে ছেড়ে গেলেন মাঠ। তখন তিনি ব্যাট করছিলেন ১৯ রানে। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার।
ধোনিকে ফেরালেন মুস্তাফিজ
উইকেটে থিতু হওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশও ম্যাচে ফিরেছে। বাঁহাতি পেসারের শরীরের বেশ বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমকে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন ধোনি (৬৭ বলে ৩৬)। ভারতের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১৬০। কেদার যাদবের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা।
জুটি ভাঙলেন মাহমুদউল্লাহ
খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দিনেশ কার্তিককে ফিরিয়ে ৫৪ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভেঙেছেন তিনি। অফ স্পিনারের ফুলটস বল মিস করে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন ৬১ বলে ৩৭ রান করা কার্তিক। ভারতের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৩৭। ৩০ রানে ব্যাট করা মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কেদার যাদব।
ধোনি-কার্তিক জুটির ফিফটি
৮৩ রানে ওপরের দিকের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বেশ চাপেই পড়েছিল ভারত। তবে চতুর্থ উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়ে সেই চাপ সামাল দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও দিনেশ কার্তিক। ৭১ বলে ছুঁয়েছে জুটির পঞ্চাশ। ২৯ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৩ উইকেটে ১৩৪। ধোনি ২৮ ও কার্তিক ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন।
ভারতের একশ
রোহিত শর্মার বিদায়ের পর কিছুটা চাপে পড়েছে ভারত। এরই মধ্যে অবশ্য দলের স্কোর একশ পার করেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও দিনেশ কার্তিক। ২৩ ওভার এক বলে ছুঁয়েছে ভারতের শতরান। ২৪ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৩ উইকেটে ১০৫। কার্তিক ২৫ ও ধোনি ১২ রানে অপরাজিত।
বিপজ্জনক রোহিতকে ফেরালেন রুবেল
রুবেল হোসেনের আগের ওভারে ছক্কা মেরেছিলেন রোহিত শর্মা। নিজের পরের ওভারে এসে ভারতীয় অধিনায়ককে ফিরিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলেন বাংলাদেশের ডানহাতি পেসার। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রোহিত রুবেলের শর্ট বল পুল করেছিলেন। কিন্তু সীমানা পার করতে পারেননি। চমৎকার ক্যাচ নেন নাজমুল ইসলাম অপু। রোহিত ৪৮ রান করে ফেরার সময় ভারতের স্কোর ৩ উইকেটে ৮৩। দিনেশ কার্তিকের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
তৃতীয় বলেই মাশরাফির উইকেট
প্রথমবার আক্রমণে এসে তৃতীয় বলেই উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বলে ড্রাইভ করেছিলেন আম্বাতি রাইডু। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। রাইডু ২ রান করে ফেরার সময় ভারতের স্কোর ২ উইকেটে ৪৬। রোহিত শর্মার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দিনেশ কার্তিক।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন অপু
প্রথম বলে ছক্কা মেরেছিলেন রোহিত শর্মা। তৃতীয় বলে চার মারেন শিখর ধাওয়ান। পরের বলেই ধাওয়ানকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। বাঁহাতি স্পিনারকে উড়াতে গিয়ে মিড অফে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪ বলে ১৫ রান করা ধাওয়ান। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। এবারের এশিয়া কাপে এই প্রথম পঞ্চাশের নিচে ভাঙল ভারতের উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা অপুর এটি প্রথম ওয়ানডে উইকেট।
মিরাজ যেখানে প্রথম
ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারে প্রথমবার নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে। পরে বল হাতেও ইনিংসের শুরুটা করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতেই বিরল এক কীর্তি গড়লেন। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে একই ওয়ানডেতে ব্যাটিং ও বোলিং ওপেন করলেন মিরাজ।
লিটনের সেঞ্চুরির পরও বাংলাদেশের ২২২
ওপেনিং জুটি ১২০ রানের। লিটন দাস করলেন ১২১। তারপরও ৯ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল মাত্র ২২২ রানেই! আগের ম্যাচগুলোতে ব্যর্থ হয়েছিল টপ অর্ডার, হাল ধরেছিল মিডল অর্ডার। কিন্তু ফাইনালে হলো উল্টোটা! মিডল অর্ডারের তিন ভরসা মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ- তিনজনের কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।
একটা সময় বিনা উইকেটে ১২০ থেকে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৫১। ৩১ রানের মধ্যেই নেই ৫ উইকেট! এরপর লিটন ও সৌম্য সরকারের ৩৭ রানের একটা জুটি। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে লিটনের আউটের পর ধসে পড়ে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার। ৪০ রানে পড়েছে শেষ ৫ উইকেট। ৩৩ রান করে রান আউট হন সৌম্য। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বোল্ড রুবেল হোসেন। রান আউট ছিল তিনটি!
৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার কুলদীপ যাদব। কেদার যাদব ৪১ রানে নেন ২ উইকেট। জাসপ্রিত বুমরাহ ও যুজবেন্দ্র চাহালের ঝুলিতে জমা পড়ে একটি করে উইকেট।
ছক্কা মেরেই ফিরলেন মাশরাফি
তিন বল আগেই কুলদীপ যাদবকে স্লগ সুইপে বিশাল একটি ছক্কা মেরেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিন বল পর ডাউন দ্য উইকেটে এসে আবার ছক্কা হাঁকাতে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এবার বল মিস করলেন, স্টাম্পড হয়ে মাশরাফি ফিরলেন ৯ বলে ৭ রান করে। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ১৯৬।
বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট লিটন
চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবকে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে বল মিস করেছিলেন লিটন দাস। বল ধরেই স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনি। স্টাম্পিংয়ের সিদ্ধান্ত যায় টিভি আম্পায়ারের কাছে। অনেকটা সময় নিয়ে রিপ্লে দেখে লিটনকে আউট ঘোষণা করেন টিভি আম্পায়ার রড টাকার। তবে তার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়! ধোনি যখন বেল ফেলে দিয়েছেন, লিটনের পা পরিষ্কারভাবে লাইনেই ছিল। সিদ্ধান্তে আসতে পারছিলেন না বলে কমপক্ষে চারবার রিপ্লে দেখেছেন রড টাকার। সেক্ষেত্রে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যাওয়ার কথা। একজন ধারাভাষ্যকারও বলছিলেন ‘নট আউট’ হবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে আউট দেন টিভি আম্পায়ার।
১১৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১২১ রান করেন লিটন। তার বিদায়ের সময় বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ১৮৬, ৪১ ওভারে।
বিপদ বাড়িয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ
শতরানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দ্রুতই আরো তিন উইকেট হারিয়ে দল তখন বেশ বিপদে। দলের বিপদটা আরো বাড়িয়ে আউট হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদবকে স্লগ সুইপ করেছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বাউন্ডারিতে দারুণ ক্যাচ নেন জাসপ্রিত বুমরাহ। মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ৪ রান করে। একটা সময় বিনা উইকেটে ১২০ থেকে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১৫১! ৩১ রানের মধ্যেই নেই ৫ উইকেট!
লিটনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
ক্যারিয়ারের প্রথম ১৭ ওয়ানডে ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ছিল ৪২। ১৮তম ইনিংসে প্রথমবার পঞ্চাশ ছুঁয়েই সেটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করলেন লিটন দাস। আগের বলে কেদার যাদবকে চার হাঁকিয়ে ৯৫ থেকে পৌঁছে গিয়েছিলেন ৯৯-এ। পরের বলটা লং অনে ঠেলে এক রান নিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন তিন অঙ্ক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই এটি লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি। ৮৭ বলে সেঞ্চুরি করতে ১১টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
রান আউট মিথুন
যুজবেন্দ্র চাহালকে ড্রাইভ করেছিলেন লিটন দাস। এক্সট্রা কাভারে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বল থামান রবীন্দ্র জাদেজা। সেদিকে না দিকেই দৌড়াতে থাকেন নন স্ট্রাইকার মোহাম্মদ মিথুন। লিটন শুরুতে এগিয়ে এলেও ততক্ষণে ফিরে গেছেন নিজের প্রান্তে, ফলাফল দুই ব্যাটসম্যান একই প্রান্তে! জাদেজার থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন বোলার চাহাল। ২ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন মিথুন।
বাজে শটে আউটে মুশফিক
পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলা মুশফিকুর রহিম ফাইনালে আউট হয়েছেন বাজে শট খেলে। কেদার যাদবের অফ স্টাম্পের বাইরের বল, একইরকম বলেই এই অফ স্পিনারকে আগের ওভারে চার মেরেছিলেন কাভার দিয়ে। এবার মুশফিক খেললেন লেগ সাইডে। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ নিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৯ বলে মুশফিক করেছেন ৫।
টিকলেন না ইমরুল
স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালকে সামনে এগিয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু বল মিস করেন, বল আঘাত হানে তার প্যাডে। এলবিডব্লিউ দিয়ে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ১২ বলে ২ রান করা ইমরুল। বাংলাদেশের স্কোর তখন ২ উইকেটে ১২৮।
মিরাজের আউটে ভাঙল শতরানের জুটি
মেহেদী হাসান মিরাজের আউটে ভেঙেছে ১২০ রানের উদ্বোধনী জুটি। অফ স্পিনার কেদার যাদবের বলে পয়েন্টে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রথমবার ওপেনিংয়ে নামা মিরাজ। ৫৯ বলে ৩ চারে ৩২ রান করেছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। লিটন অপরাজিত আছেন ৮৬ রানে। তিন নম্বরে নেমেছেন ইমরুল কায়েস।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। লিটন-মিরাজ ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ১০২ রানের জুটিকে।
লিটন-মিরাজ জুটির সেঞ্চুরি
রবীন্দ্র জাদেজার বলটা কাট শটে থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন লিটন দাস। এই চারেই পূর্ণ হলো উদ্বোধনী জুটির শতরান। ৮৭ বলে ছুঁয়েছে জুটির সেঞ্চুরি। ১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ১০২। লিটন ৭৩ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২৭ রানে অপরাজিত আছেন।
২৪ ওয়ানডে (৩টি পরিত্যক্ত ম্যাচ বাদে) পর শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল বাংলাদেশ। সর্বশেষটি এসেছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস।
জীবন পেলেন লিটন
এক বল আগেই রবীন্দ্র জাদেজাকে চার মেরে ছুঁয়েছিলেন ফিফটি। এক বল পরই স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন লিটন দাস। তবে মিড অনে কিছুটা পেছন দিকে দৌড়ে বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন যুজবেন্দ্র চাহাল। ৫২ রানে জীবন পান লিটন।
লিটনের প্রথম ফিফটি
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি পেয়েছেন লিটন দাস। ১৮তম ইনিংসে পেলেন প্রথম ফিফটি। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৪১, এই এশিয়া কাপেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে। রবীন্দ্র জাদেজাকে স্কয়ার ড্রাইভে চার হাঁকিয়ে ৩৩ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এই সময়ে তিনি চার মারেন ৬টি, ছক্কা ২টি।
লিটন-মিরাজ জুটির পঞ্চাশ
১, ১৫, ১৫, ১৬, ৫- এগুলো এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ ম্যাচে ওপেনিং জুটির রান! প্রথম ম্যাচেই চোট নিয়ে ছিটকে যান তামিম ইকবাল। পরের তিন ম্যাচে লিটন দাসের সঙ্গী হিসেবে ওপেন করতে পাঠানো হয় নাজমুল ইসলাম শান্তকে, আর সর্বশেষ ম্যাচে সৌম্য সরকারকে। কিন্তু ওপেনিং জুটির ভাগ্যে বদল আসেনি।
আজ ফাইনালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিটনের সঙ্গী হিসেবে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাতেই বাংলাদেশ পেয়েছে টুর্নামেন্টে নিজেদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি, প্রথম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। ৪৬ বলে ছুঁয়েছে জুটির পঞ্চাশ। ৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ৫৮। লিটন ৪১ ও মিরাজ ১৫ রানে অপরাজিত আছেন।
১১ ম্যাচ পর পঞ্চাশোর্ধ উদ্বোধনী জুটি পেল বাংলাদেশ। সর্বশেষটি ছিল এ বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয় জুটির ৭১ রান।
ওপেনিংয়ে মিরাজ
ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছিলেন, ওপেনিংয়ে চমক দেখা যেতে পারে। অধিনায়কের কথাই সত্যি হলো। আগের সব ম্যাচে ওপেনিং জুটি ব্যর্থ হয়েছে। আজ সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিটন দাসের সঙ্গী হিসেবে ওপেন করতে নেমেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যারিয়ারের আগের ওয়ানডে ১০ ইনিংসে মিরাজ ব্যাটিং করেছেন ছয়, আট ও নয় নম্বরে। এই প্রথম নামলেন ওপেনিংয়ে।
ভারত দলে পাঁচ পরিবর্তন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে দুই ওপেনার অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে তিন বোলার ভুবনেশ্বর কুমার, জাসপ্রিত বুমরাহ ও যুজবেন্দ্র চাহালকে বিশ্রাম দিয়েছিল ভারত। আজ তারা সবাই দলে ফিরেছেন। বাদ পড়েছেন লোকেশ রাহুল, মনিশ পান্ডে, দীপক চাহার, সিদ্ধার্থ কৌল ও খলিল আহমেদ।
ভারত একাদশ
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, আম্বাতি রাইডু, দিনেশ কার্তিক, মহেন্দ্র সিং ধোনি, কেদার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, ভুবনেশ্বর কুমার, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ ও যুজবেন্দ্র চাহাল।
বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন
আগের ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন এসেছে। পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলতে মুমিনুল হককে বাদ দিয়ে দলে নেওয়া হয়েছে বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে। আগের ম্যাচে চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ
লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিথুন, সৌম্য সরকার, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।
টস: ফাইনালে টস ভাগ্য পাশে পেলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অর্থাৎ আগে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায়।
আরেকবার শিরোপা জয়ের হাতছানি
আরেকটি ফাইনাল, আরেকবার শিরোপা জয়ের হাতছানি। এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের সামনে ভারত। গত আসরে এই ভারতের কাছে হেরেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের। যদিও সেটা ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এবার খেলাটা ৫০ ওভারের। এই নিয়ে এশিয়া কাপের শেষ চার আসরে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় ফাইনাল। গত আসরের আগে ২০১২ সালের ফাইনালে হেরেছিল পাকিস্তানের কাছে। ২ রানের সেই হারের পর সাকিব-মুশফিকদের কান্না ছুঁয়ে গিয়েছিল গোটা দেশকে। এবার অঘোষিত সেমিফাইনালে সেই পাকিস্তানকে হারিয়েই শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে এসেছে বাংলাদেশ। ফাইনালের পথটা যদিও সহজ ছিল না।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই কবজির চোট নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায় তামিম ইকবালের। আঙুলের চোট নিয়ে খেলতে যাওয়া সাকিব আল হাসানকে হারাতে হয় পাকিস্তান ম্যাচের আগে। দেশের ফিরে এরই মধ্যে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছে তাকে। আর কয়েক ঘণ্টা দেরি হলে বড় বিপদই হতে পারত এই অলরাউন্ডারের! মুশফিকুর রহিম পাঁজরের চোট নিয়েই খেলছেন, ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে বেশি অবদানও রাখছেন তিনিই। আগের ম্যাচে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নিয়ে আঙুলে চোট পেয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজাও। গরমের সঙ্গে লড়াই তো আছেই। সব বাধা পেরিয়ে ফাইনালে উঠেছে দল। এবার শিরোপাটা ধরা দিলে সেটি হবে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিই। বাংলাদেশ যে কখনো ত্রিদেশীয় সিরিজ, বৈশ্বিক কিংবা মহাদেশীয় কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতেনি।
এগিয়ে ভারত
দুই দল এর আগে ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে ৩৪ বার। যেখানে ভারতের জয় ২৮ ম্যাচে, বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি, একটির ফল হয়নি। এশিয়া কাপে দুই দলের ১১ বারের দেখায় ১০ বারই জিতেছে ভারত। বাংলাদেশের একমাত্র জয়টা ২০১২ সালের টুর্নামেন্টে।