আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচ বাবদ ৭০০ কোটি টাকা বাজেট অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার দিনব্যাপী বৈঠক শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিব বলেন, আমরা আজ বৈঠকে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের বৈঠকটি ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
সিইসি আমাদের বলেছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের খরচ বাবদ ৭০০ কোটি টাকা বাজেট রয়েছে। এই টাকার মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
ইসি সচিব বলেন, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি ইসির কাছে তুলে ধরেছি। আমরা এরই মধ্যে বেশকিছু নির্বাচনি সামগ্রী সংগ্রহ করেছি। বাকিগুলো অক্টোবরের মধ্যেই সংগ্রহ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ইসির রয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য আরপিও সংশোধন করে তা সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকার অনুমোদন দিলে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টিও কমিশন ভেবে দেখবে।
সচিব আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে খাতভিত্তিক ব্যয়ের জন্য নির্বাচন কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। অনেক নির্বাচন সামগ্রী ক্রয় করে গুদামজাত করা হয়েছে। অবশিষ্টগুলো ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই কেনা হবে।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের গুরুত্বপূর্ণ এ সভা বর্জন করায় কার্যক্রমে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সভা বর্জন করেছেন। আমরা সারাদিন সভা করেছি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বৈঠকের এজেন্ডায় কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলেছিলেন। সেগুলো অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় প্রথমে তিনি বৈঠকে যোগ দিলেও পরে বর্জন করেন। আশা করি আগামী বৈঠকগুলোতে সবাই উপিস্থত থাকবেন।
সংসদ ভোটের তফসিলের বিষয়ে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আমরা সবিকছু চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি। ভোটার তালিকার সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) প্রস্তুত করে আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। কোনো ভুলত্রুটি থাকলে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তাদের অবহিত করতে বলা হয়েছে। ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজও শেষ করেছি। ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ অতিরিক্ত রাখা হয়েছে যদি দুর্বিপাকের কারণে অন্যত্র সরাতে হয়। তফসিল ঘোষণার পর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মনোনয়নপত্রে হিজড়াদের জন্য আলাদা কোনো কলাম থাকবে না। এক্ষেত্রে তাদের জন্য আগের নিয়মই বহাল থাকছে।
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং (ইভিএম) মেশিন ব্যবহারের প্রস্ততিও থাকবে। এক্ষেত্রে সরকারের কাছে আইন সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আইন সংশোধন হলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ইভিএমকে জনপ্রিয় করার জন্য আগামী ২৭ অক্টোবর দেশের নয়টি স্থানে এবং নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে দুই দিনব্যাপী ইভিএম মেলার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। বিশেষ করে ফেমবোসা অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর কর্মকর্তাদের আমরা বিশেষ আমন্ত্রণ জানাবো।
সচিব বলেন, নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অনলাইন এবং নিজস্ব সিস্টেমের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনে আমাদের প্রচুর লোকবলের প্রয়োজন হয়। এজন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোকবল সংগ্রহ করা হবে। ইতিমধ্যে সরকারের কাছে মাঠ পর্যায়ে পদ ফাঁকা না রাখতে ইসির নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সংলাপের ওঠে আসা বিষয়গুলোর মধ্যে সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ যে সকল বিষয় আমাদের এখতিয়ারভুক্ত সে সকল বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করেছি।