আগামী ২৩ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। ভাষণে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করছেন।
ভাষণে সিইসি বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৯ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ নভেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর।
কেএম নূরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করছি।
সিইসি বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ এ কার্যক্রম, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় আপনাদের সহযোগিতা, সাহায্য ও সমর্থন কামনা করি। জাতির আকুল আগ্রহের এ জায়গায় সবাইকে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সফল হবো, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য শপথ নিয়েছি। সংবিধান মোতাবেক ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ সালের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অারো বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, জাতীয় সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, আইন সংস্কারসহ মোট সাতটি করণীয় বিষয় স্থির করে ২০১৭ সালে আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছিলাম।’
এর আগে বেলা ১১টায় ভোটের তারিখ চুড়ান্ত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে ইসির বৈঠক হয়। কমিশনের ৩৯তম বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে সংবিধানে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে ইসি বদ্ধ পরিকর। এজন্য গত ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত করে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানায় ইসি।
যদিও সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করার দাবি জানিয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু সেই দাবি অগ্রাহ্য করেই তফসিল ঘোষণা করলেন সিইসি।
বুধবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসির অধীনে থাকবে। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে দফায় দফায় সংলাপ অনুষ্ঠিত হলেও তাতে আশানুরূপ কোনো ফল দৃশ্যমান হয়নি বলে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানিয়েছেন।
এদিকে, ইসি সচিব জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে আনা হয়েছে। এবারও বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।