muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কটিয়াদী

কটিয়াদীতে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ করতে প্রতিরোধের মুখে কর্মকর্তাগণ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের জমি অধিগ্রহণ করতে এসে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়েন কর্মকর্তা ও পুলিশ। গত মঙ্গলবার উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের চান্দপুর হাওর এলাকায় জমি অধিগ্রহণের জন্য দাগ খতিয়ান চিহ্নিত করতে গেলে এলাকাবাসী বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতার প্রতিরোধের মুখে ফিরে যান তারা।

জানা যায়, ২০১৬ সালে প্রধান মন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ হাওর-বাওর ও জলাভূমির উন্নয়ন সভায় নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে হাওর এলাকায় নির্দিষ্ট উচ্চতায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবারহের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লি: এর অনুকুলে ৪০০একর (কম/বেশি) জমি অধিগ্রহনের প্রশাসনিক অনুমোদন দেন। ১০০ মেগাওয়াট গ্রীড টাইড সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনরে জন্য কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলাধীন চাঁন্দপুর মৌজায় চান্দপুর হাওরকে নির্বাচিত করে কার্যক্রম প্রক্রিয়া শুরু করেন।

কিন্তু এলাকাবাসীর সাথে এ ব্যাপারে কোনরূপ যোগাযোগ না করে বা তাদের সাথে এ বৃহৎ পরিকল্পনার বিষয়টি আলোচনা না করে জমি অধিগ্রহণ করতে আসেন ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও আশুগঞ্জ পাওয়ার গ্রীড কো;লি: এর প্রতিনিধি দলসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এলাকার নেতৃস্থানীয় কিছু লোক এই খবর মাইকিং করে জানালে হাজার হাজার জনতা উপস্থিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন এবং কর্মকর্তাগণ তাদের বাধার মুখে পড়েন। এলাকাবাসী এ প্রকল্প প্রতিহত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন এবং তাদের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চান্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন বলেন, অত্র এলাকায় একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হবে বিষয়টি আমার জানা নেই বা আমাদেরকে অবহিত করা হয়নি। কর্মকর্তারা সার্ভেয়ারসহ ভূমি অফিসের লোকদের নিয়ে প্রকল্প এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকদের বাধার সম্মুখীন হয় এবং অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত লস্কর পারভেজ বলেন, চান্দপুর মৌজায় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না বা আমাকে কেউ অবহিতও করেনি।

কৃষক নেতা মোস্তফা কামাল নান্দু বলেন, দরিদ্র কৃষকের এ জমি বর্ষায় মাছ এবং একমাত্র বোরো ফসল থেকে তাদের সারা বছরের খোরাকি এবং বছরের অন্য ব্যয়ের অর্থের উৎস। এ জমি অধিগ্রহণ করা হলে এলাকার কৃষক জীবন মরণের হুমকিতে পড়ে যাবে।

উপাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ হাসান রুমেল বলেন, সরকারের বৃহৎ এবং মহৎ এ পরিকল্পনা স্থানীয় জনগণকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত না করার কারণে এমন অনাকাংখিত ঘটনা ঘটেছে। এলাকার জনগণের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সরকারের এ মহতি উদ্যোগ কর্মকর্তাদের অনেকটা নির্বুদ্ধিতার কারণে বাধাগ্রস্থ বলে তিনি মনে করেন।

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের জুনিয়র ম্যানেজার কামরুল ইসলাম বলেন, ১০০ মেগাওয়াট গ্রীড টাইড সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য জেলার কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর মৌজায় ৪০০একর জমি আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের অনুকুলে অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন আছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান কেয়া বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ একটি দীর্ঘমেয়াদ পরিকল্পনা। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের নিয়ে লোকজনের সাথে কথা বলে এবং উধর্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতার আহবান জানান।

 

Tags: