চলতি শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। পরে সমালোচনার মুখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় যাচাই পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৬ নভেম্বর শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের বিভিন্ন কেন্দ্রে উত্তীর্ণ ১৮ হাজার ৪৬৩ শিক্ষার্থীর এ ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এর আগেই সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা।
১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা কেন ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হবে না মর্মে গত ২১ অক্টোবর হাইকোর্টের এক আইনজীবী রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় অকৃকার্য এক শিক্ষার্থীকে পুনরায় পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার নির্দেশ দেন।
যেখানে রিটকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু অকৃতকার্য একজনকে সুযোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু যদি সুযোগ দিতে হয় তাহলে কেন একজনকে- সবাই কেন এ সুযোগ পাবে না- এখন এই প্রশ্ন উঠেছে।
যাকে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ নির্দেশ দিয়েছেন আদারত তিনি সুপ্রিম কোর্টর আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দের মেয়ে আনিকা বিনতে ইউনুছ। এই আইনজীবী ওই রিট আবেদন করেছিলেন।
‘যদি অকৃতকার্য হওয়ার পরও সুযোগ দিতে হয় তাহলে কেন বাবিরা কেন সুযোগ পাবে না-‘ ‘ঘ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের প্রতি কাছে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর নিজে দিতে চাননি।
তিনি জানান, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু নির্দেশের কপি এখনও আমাদের হাতে আসেনি। আগে নির্দেশের কপি হাতে আসুক, তারপর বিষয়টি আমাদের আইন উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে সুরাহা করা হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা আব্দুল হালিম চাকলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।
শুনানিকালে আদালত বলেন, যেহেতু ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফের পরীক্ষা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাহলে শুধু উত্তীর্ণদের কেন? পরীক্ষা নিলে সকলেরই নিতে পারতো। বাকিদের কেন নেয়া হবে না এমন প্রশ্ন করেন আদালত।
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি বরং ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। এমনকি এর সঙ্গে জড়িত কিছু সংখ্যককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে এমনটিই উঠে এসেছে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু উত্তীর্ণদের ফের পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ সময় আদালত বলেন, সকলেরই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত ছিল। পরে আদালত আইনজীবী ইউনুছ আলীর মেয়ে আনিকা বিনতে ইউনুছকে ফের ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ দিতে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।