কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক অ্যালেক্স আপনের বিচার দাবিতে গত তিনদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আল নূর বিদ্যানিকেতনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী স্কুলের অন্য এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় প্রধান শিক্ষক অ্যালেক্স আপন ছাত্রীর মায়ের বরাত দিয়ে তাঁর রুমে ডেকে নেন। এ সময় তিনি রুমের দরজা আটকে ছাত্রীটির শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন।
এসময় ভূক্তভোগী ছাত্রী আসতে দেরি হওয়ায় সহপাঠী নাজমা বেগম এসে প্রধান শিক্ষকের রুমের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। এ সময় প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে কান্নার শব্দ শুনে দরজায় ধাক্কা দেয় নাজমা। তখন প্রধান শিক্ষক অ্যালেক্স আপন দরজা খুলে ভূক্তভোগী ও সহপাঠী নাজমাকে এসব কথা কাউকে বলার জন্য শাসিয়ে দেয়।
ভূক্তভোগী ছাত্রী ও সহপাঠী নাজমা বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি মা-বাবার কাছে বলে। এরপর ভূক্তভোগী ছাত্রীর পিতা সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক অ্যালেক্স আপনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
স্থানীয়রা জানান, অ্যালেক্স আপন দীর্ঘদিন যাবত নিজের বাড়ির কয়েকটি কক্ষে আল নূর বিদ্যানিকেতন নামে একটি স্কুল খুলে পাঠদানের নামে বিভিন্ন সময় ওই স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছেন। এমন একাধিক ঘটনায় শিক্ষক অ্যালেক্স আপনের বিরুদ্ধে এলাকায় শালিস দরবার হয়। অনেক কমলমতি ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হলেও লোক লজ্জার ভয়ে অনেকে মুখ খুলেননি।
অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী তাহমিনা জানান, তাঁর স্বামী ঘটনার সময় ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রুমে নিয়ে তার পরিহিত জামা ঠিক করে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু লোক তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সাংবাদিকরা সরেজমিনে মঙ্গলবার সকালে আল নূর বিদ্যানিকেতনে গেলে লম্পট শিক্ষক অ্যালেক্স আপন গাঁ ঢাকা দেয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠকে বলেন, আগানগর ইউনিয়নের শান্তিনগরে একটি স্কুলে যৌন হয়রানির ঘটনার একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছি। আসামী ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ/এন