muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

বাংলাদেশে শিশু হত্যা : যেসব কারণে এতো দ্রুত বিচার

bd_people_sylhet_court-rajon
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশে শিশু হত্যার দুটো চাঞ্চল্যকর ঘটনার মামলায় মোট ছয় জনের ফাঁসির রায় হয়েছে।

সিলেটে ১৩ বছরের সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার জন্যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড আর খুলনায় মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে ১৩ বছরের রাকিব হাওলাদারকে হত্যার দায়ে দু’জনকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে পর পর এই দুটো শিশু হত্যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল।

জুলাই ও আগস্ট মাসের এই দুটো স্পর্শকাতর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়ে গেলো ৮ই নভেম্বরের মধ্যেই।

এই দুটো মামলার বিচারের জন্যে আদালতের জন্যে সময় লেগেছে মাত্র তিন চার মাস, যথাক্রমে ১৯ ও ১১টি কার্যদিবস।

কোনো হত্যাকাণ্ডের এতো দ্রুত বিচারের নজির বাংলাদেশে নেই বললে চলে।

আইনজীবীরা বলছেন, মামলা দুটোকে ঘিরে জনগণের আগ্রহ ও প্রচণ্ড ক্ষোভের কারণে এতো তাড়াতাড়ি এই দুটো হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে।
খুলনা ও সিলেটে এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালতে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলো। আসামীদের যখন নিয়ে আসা হয় তখন তারা তাদের বিরুদ্ধে শ্লোগানও দিয়েছে।

এই আগ্রহের কারণে দ্রুত বিচারের জন্যে একটা চাপও তৈরি হয়েছিলো আদালতের ওপর।

অন্যদিকে, সরকারও মামলা দুটোকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে।

এতো অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত, অভিযোগ গঠন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের কাজ শেষ করেছে।

অবশ্য এই দুটো মামলাতেই আসামী পক্ষ উচ্চতর আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

রাজন হত্যা

সিলেটে শিশু রাজনের বাবা মা তাদের সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় যতো দ্রুত সম্ভব কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

খুব দ্রুত রায় ঘোষণা করায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে গত জুলাই মাসে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে পেটানোর পর তার মৃত্যু হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার মাসের মাথায়, আদালতের মাত্র ১৯ কার্যদিবস শেষে এই মামলার রায় হলো।

সিলেটের মহানগর দায়রা জজ বিচারক আকবর হোসেন মৃধা তার রায়ে প্রধান আসামী কামরুল ইসলামসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

রায়ের পর রাজনের বাবা আজিজুর রহমান বলেছেন, “ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর হলেই রাজনের আত্মা শান্তি পাবে।”

রাজনকে পেটানোর ভিডিওটি ফেসবুকসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

রাকিব হত্যা

খুলনায় যে শিশু রাকিব হাওলাদারকে তার মলদ্বার দিয়ে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো, তার পরিবারের সদস্যরা এই রায়ে খুশি হলেও একজন আসামীকে বেকসুর খালাস দেওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

খুলনা মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানা এই মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

তারা হলেন রাকিব যে কারখানায় কাজ করতো সেই শরীফ মোটর্সের মালিক ওমর শরীফ এবং তার সহযোগী মিন্টু খান।

শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

তাকে খালাস দেওয়ায় রাকিবের পরিবারের সদস্যরা আদালতে বিক্ষোভও করেছেন।

রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, “কমপ্রেসর মেশিন দিয়ে কারো পেটে হাওয়া দিয়ে কাউকে হত্যা করার ঘটনা এই পৃথিবীতে বিরল।”

বেশি মজুরির আশায় সে শরীফ মোটর্স থেকে বেরিয়ে অন্য একটি কারখানায় কাজ নিলে তাকে এভাবে হত্যা করা হয়।

রাকিবকে হত্যা করা হয় ৩রা আগস্ট, তারপর মাত্র ১১ কার্যদিবসে এই বিচার কাজ শেষ করা হয়েছে।

Tags: