একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জে তিন প্রেসিডেন্টপুত্রের মনোনয়নপত্র বৈধ।বিএনপির মেজর রঞ্জন ভিপি সোহেল সুমন ও নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানের মনোনয়ন বাতিল করেছে। রোববার (২ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে এসব মনোসয়ন বাতিল ও বৈধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জের তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী তিন প্রেসিডেন্টপুত্র আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র, বিসিবি ও এসিসি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন এমপি প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের পুত্র এবং রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের পুত্র।
কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি, কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে নাজমুল হাসান পাপন এমপি এবং কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি নির্বাচনে আর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে বিএনপি প্রার্থী সাবেক ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান চুন্নু এঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
নাজমুল হাসান পাপন এমপি’র কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে জেলা বিএনপি সভাপতি মো. শরীফুল আলম এঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
এছাড়া রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি’র কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান এঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, অবৈধ ৫ জনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পাঁচ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২ ডিসেম্বর) সকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করেন।
মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ( আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ) ড. মিজানুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান নয়ন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আম্মান খাঁন, কমিউনিস্ট পার্টির ডাঃ এনামূল হক ইদ্রিছ, বিএনপি মনোনীত সহকারি প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সুমন ভিপি।
ড. মিজানুল হকের মনোনয়ন ফরমে নিজেকে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী উল্লেখ করায়, সাইফুল ইসলাম সুমন মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর/ শিক্ষা সনদ না থাকা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে পদ বহাল থাকায়, কমিউনিস্ট পার্টির এনামূল হক ইদ্রিছের মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর না থাকায় ও অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হক নয়ন এবং আম্মান খাঁন এর মনোনয়ন ফরমে ত্রুটি থাকায় তাদের মনোনয়ন ফরম বাতিল ঘোষনা করা হয়।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন দলের ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এদের মধ্যে ৬ জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষনা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন, মহাজোটের জাতীয় পার্টির মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মো. আলমগীর হোসাইন, বিএনপি মনোনীত জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস, গণতন্ত্রী পার্টির দিলোয়ার হোসাইন ভুঁইয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর মো. শওকত আলী।
জেলা রিটানিং অফিসার মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে চাইলে আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এই পর্বের পর ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন। এর পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোননয়নপত্র বাছাইয়ে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত দুই প্রার্থী অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফ ও খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল এর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এছাড়া দ-প্রাপ্ত হওয়ায় খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খান এর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
তবে এ আসনে বিএনপির অপর প্রার্থী রেজাউল করিম খান চুন্নু এর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাছাইয়ে অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফ ও খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল সহ মোট পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া অন্যরা হলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রার্থী মুহ. আবদুর রহমান এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ ইউসুফ।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রার্থী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি ও মো. মশিউর রহমান হুমায়ুন, বিএনপি প্রার্থী মো. রেজাউল করিম খান চুন্নু, গণতন্ত্রী পার্টি প্রার্থী অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম তারেক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র প্রার্থী মো. এনামুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ প্রার্থী মুহাম্মদুল্লাহ জামী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোননয়নপত্র বাছাইয়ে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন এর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। খেলাপি ঋণের জামিনদার হওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তবে এ আসনে বিএনপির অপর প্রার্থী মো. শহীদুজ্জামান কাকন এর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া অন্যরা হলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী নূরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এরশাদ হোসাইন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রার্থৗ মো. লুৎফুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) প্রার্থী মীর আবু তৈয়ব মো. রেজাউল করিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মো. সালাউদ্দিন রুবেল এবং স্বতন্ত্র মো. আনিসুজ্জামান খোকন।