আজ ৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে ঈশ্বরগঞ্জ পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যদায় উদযাপন করতে ঈশ্বরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড ও উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে মধ্যে রযেছে তোপধ্বনি, পতাকা উত্তোলন, শহীদদের কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিজয় র্যালী, আলোচনা সভা।
বিজয়গাঁতা এ দিনের স্মৃতিচারণ করে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কমান্ডার আব্দুস ছাত্তার বলেন, নিজ এলাকাকে হানাদার মুক্ত করতে একাত্তুরের ১৬ অক্টোবর রাতে কাজী আলম, আলতাব ও হাবিবুল্লাহ খান নামের তিন কোম্পানির মুক্তি সেনারা ময়মনসিংহ-ভৈরব রেললাইনের মাইজহাটি ব্রিজটি ডিনামাইট ছুঁড়ে ভেঙ্গে দেন। একইসঙ্গে এলাকার টেলিফোন লাইন বিছিন্ন করে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের রামগোপালপুর কটিয়াপুরি ব্রিজটিও ভেঙ্গে দেন। সারারাত অপারেশন চালিয়ে প্রত্যুষে মুক্তিসেনারা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মরহুম হাসিম উদ্দীন আহাম্মদের পরামর্শে থানা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই দিন তিন কোম্পানির মুক্তিসেনারা সড়ক পথে অগ্রসর হয়ে দত্তপাড়া শ্নশান ঘাটে এসে বিভক্ত হয়ে তিনদিক থেকে থানা আক্রমণ শুরু করেন।
শুরু হয় পাক হানাদারদের সঙ্গে তুমুলযুদ্ধ। পরিকল্পনায় ত্রুটির জন্য চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পরায় এই অভিযান ব্যার্থ হয়। সম্মুখযুদ্ধে পাকহানাদারদের হাতে শহীদ হন শামছুল হক, আব্দুল মান্নান, আব্দুল খালেক, দুলাল, মতিউর রহমান, আবু তাহের ও হাতেম আলী। শহীদদের রক্তের বদলা নিতে মুক্তিযোদ্ধারা সুসংগঠিত হয়ে ৮ ডিসেম্বর আবারও থানা আক্রমন করেন। ভয়াবহ আক্রমনের মুখে পাকহানাদাররা ভীত হয়ে গভীর রাতে থানা থেকে পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় ঈশ্বরগঞ্জ। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ে উড়ানো হয় লাল-সবুজের স্বাধীনতার পতাকা।