ভৈরব-কুলিয়ারচর উপজেলা নিয়ে ঘটিত কিশোরগঞ্জ-৬ সংসদীয় আসনে ২৩ দলীয় ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি তরুণ শিল্পপতি মোঃ শরীফুল আলম সিআইপি ২৮ টি গায়েবী মামলায় জামিন পেয়ে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে তার নির্বাচনী এলাকা নিজ জন্মভূমি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রবেশ করার সাথে সাথে পৌর এলাকা সহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন থেকে নেতা কর্মীরা ব্যান্ডের তালে তালে মিছিল সহকারে কুলিয়ারচর বাজারে প্রবেশ করে তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করে নেন । প্রায় তিন মাস পর নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে একপর্যায়ে চোখের জল ফেলে কাঁদতে থাকেন শরীফুল আলম। এ সময় আলমের চোঁখের জল দেখে উপস্থিত জনতা তাদের চোঁখের জল ধরে রাখতে পারেনি কেঁদে ফেল্লেন তারাও।
অনেকদিন পর শরীফুল আলম নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসছেন এমন সংবাদ পেয়ে সকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা আলমকে এক নজর দেখতে কুলিয়ারচর বাজারে জমায়েত হতে থাকে। শরীফুল আলম ঢাকা থেকে সড়কপথে কিশোরগঞ্জ হয়ে বিকেল ৪ টার দিকে কুলিয়ারচরে এসে পৌঁছলে সর্বস্থরের মানুষ তাকে স্বাগত জানায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীফুল আলম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকায় এসে পৌঁছলে কুলিয়ারচর বাজার লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
সম্প্রতি তিন মাস সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন থানায় ২৬ এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব ও কুলিয়ারচর থানায় শরীফুল আলমসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামে ২ টিসহ সিরিজ ২৮ টি মামলা হওয়ার কারনে তিনি আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন। ওই মামলাগুলো হওয়ার পর থেকে তিনি তাঁর নির্বচনী এলাকায় স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে প্রকাশ্যে কোন রাজনৈতিক কর্মসুচি পালন করতে পারছিলেন না । এমনকি ওই মামলা গুলোর জামিন নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোনটিও বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই অবস্থায় গত ১২ নভেম্বর তিনি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ থেকে সব কটি মামলায় জামিন নিয়ে তাঁর নির্বচনী এলাকায় আসতে চাইলেও ভৈরবের নেতা-কর্মীদের নামে আরো নতুন ২টি মামলা হওয়ায় ওইসব নেতাকর্মীদের জামিনের ব্যবস্থা করে একই সঙ্গে নির্বাচন শুরুর পূর্বেই আরো নতুন মামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় ও গ্রেফতার আতঙ্কের কারণে দলীয় নেতা-কর্মীরা যাতে নতুন করে হয়রানির শিকার হতে না হয় সেই জন্যে তিনি এলাকায় আসতে সময় নেন বলে জানান নেতাকর্মীরা। ফলে তাঁর অনুপস্থিতিতেই দলীয় নেতাকর্মীরা গত ২৭ নভেম্বর কুলিয়ারচর ও ২৮ নভেম্বর ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট শরীফুল আলমের পক্ষে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা । এই অবস্থায় দীর্ঘদিন পর শরীফুল আলমকে কাছে পেয়ে দলের সাধারন নেতাকর্মীরা অনেকেই আবেগে আপ্লোত হয়ে পড়ে। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হয় ব্যাপক প্রাণ চান্চল্যের এই অবস্থায় শরীফুল আলম দলীয় নেতাকর্মীদের শান্তনা দিতে কুলিয়ারচর বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ভৈরব- কুলিয়ারচরের মানুষের পাশে সবসময় ছিলাম এবং থাকবো। এবারের নির্বাচন দেশ, জাতি ও গনতন্ত্রের অস্থিত্ব রক্ষার নির্বাচন, মামলা হামলা, হত্যা, গুম ও নির্যাতন হইতে দেশবাসীকে রক্ষার নির্বাচন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন। এই নির্বাচনের সাথে আমাদের অস্থিত্ব জড়িত। কাজেই প্রতিটি ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক নূরুল মিল্লাত, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, ভৈরব উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম, ভৈরব পৌর সভার সাবেক মেয়র হাজী মোঃ শাহীন, কুলিয়ারচর পৌর বিএনপি’র সভাপতি হাজি মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক শাহাতৎ হোসেন শাহ আলম, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম সহ উপজেলার ৬ ইউনিয়ন ও পৌর সভার নেতাকর্মীবৃন্দ।