জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে অবাধ চলাচলের দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে ইসি সচিবের সঙ্গে দেখা করে একথা জানান দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় আওয়ামী লীগের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম নির্বাচনে অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলও চলাচলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর বাইরে আমরা নির্বাচনের দিন যাতে সাংবাদিকরা বিনা বাধায় চলাচল করতে পারে তা নিশ্চিত করতে ইসিকে অনুরোধ করেছি। তারা বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করছেন যে এ ধরনের কোনো বাধা থাকবে না।
আখতারুজ্জামান বলেন, কালো টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে যাতে বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য ইসির হস্তক্ষেপ চেয়েছে আওয়ামী লীগ। কালো টাকার ব্যবহার সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন সামনে রেখে কালো টাকা ছড়ানোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও মহাজোট নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলাও করছে। আমাদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করছে, মিছিলে হামলা চালাচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতা করে উল্টো ইসিতে এসে প্রতিদিন তারা অভিযোগও করছে। অথচ সত্য হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করছে। এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও হামলা চালাচ্ছে। বিষয়গুলো আমরা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেছি।
কালো টাকা ছড়ানো ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ওপর হামলা করার বিষয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, ঢাকা-৮ আসনের মির্জা আব্বাসের দুই কর্মী কালো টাকা ছড়াতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। আমরা এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। মৌলভীবাজারে সুলতান মোহম্মদ মনসুর একজন পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেছেন। আজ সকালেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ মোমেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে সশস্ত্র ক্যাডাররা। সীতাকুন্ডে পেট্রল বোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের চারজন কর্মী এখন হাসপাতালে।
এছাড়া চাঁদপুরে ডা. দীপু মনির বাড়িতেও বিএনপি হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হন ৩০ জন। ইসি সচিবের সঙ্গে দেখা করে আমরা এ সব ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ দাবি করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র ৪ দিন বাকি। এখন পেট্রল বোমা, গান পাউডার, আগুন সন্ত্রাস শুরু হওয়ায় আমাদের ২০১৪ সালের কথা মনে পড়ছে। ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি জোট নেতারা একবার বলছেন, ভোট করবে, মাঠ ছেড়ে যাবে না। একবার কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন, আবার অসহযোগিতার প্রশ্ন তুলছেন। তারা আসলে বিচলিত, অস্থির। নির্বাচনকে বানচাল, ক্ষতিগ্রস্ত করতে তারা অস্থিরতায় ভুগছে বলে তাদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হচ্ছে।
ফোন নম্বর ক্লোনিং করে একটি চক্র বিভ্রান্তি ছড়াতে পারেন এমন আশঙ্কা জানিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ফোন কলের জালিয়াতি করে নম্বর ক্লোন করে, ভুল তথ্য যেন না যায় এ বিষয়েও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। যাতে করে কোনো নির্দেশনা যদি আসে, নম্বর সঠিক কি-না, ক্লোন করা হয়েছে কি-না তা যেন তারা নিশ্চিত হয়ে ব্যবস্থা নেন।