একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৯৭ জন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী। তবে এই তালিকায় জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন। এছাড়া বিএনপির মনোনয়নে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও ভোট বর্জন করেছেন।
ভোট বর্জনকারীদের মধ্যে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থীও আছেন। এদিকে গত সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তাদের শতাধিক প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।
ভোট বর্জনের ক্ষেত্রে কেন্দ্র দখল, আগের রাতে সিল মারা, নির্বাচনী সহিংসতা, হুমকি, অনিয়ম, এজেন্ট বের করে দেওয়াসহ প্রার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন। কোনো কোনো আসনে পুনঃভোটের দাবি জানানো হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় সারা দেশে ২২টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে বলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান।
ভোট বর্জনকারী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা-১ আসনে সালমা ইসলাম, ঢাকা-৮ মির্জা আব্বাস এবং ঢাকা-১৭ আন্দালিভ রহমান পার্থ। বরিশাল-৪ জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর, মাহবুবুল আলম দুলাল ও মনিরুজ্জামান মন্টু, বরিশাল-৫ আবদুস সাত্তার এবং বরিশাল-৬ আবুল হোসেন খান। সিরাজগঞ্জ-১ রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ রোমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জ-৩ আবদুল মান্নান তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, সিরাজগঞ্জ-৫ আমিরুল ইসলাম আলীম এবং সিরাজগঞ্জ-৬ এম এ মুহিত। কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আজাদ, মুন্সীগঞ্জ-১ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নীলফামারী-৩ হামিদুল হক, খুলনা-১ আমির এজাজ খান ও সুনীল শুভ রায়, খুলনা-৩ রফিকুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ। কুষ্টিয়া-১ রেজা আহম্মেদ বাচ্চু, রংপুর-১ সিএম সাদিক, নাটোর-১ কামরুন্নাহার শিরীন, নাটোর-২ সাবিনা ইয়াসমিন ছবি ও মজিবুর রহমান সেন্টু এবং নাটোর-৩ দাউদার মাহমুদ।
কিশোরগঞ্জ-১ রেজাউল করিম চুন্নু, কিশোরগঞ্জ-৩ সাইফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-৫ শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল এবং কিশোরগঞ্জ-৬ শরিফুল আলম। নওগাঁ-৪ শামসুল আলম প্রামাণিক, চট্টগ্রাম-৫ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, ঝিনাইদহ-১ আসাদুজ্জামান, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান এবং ঝিনাইদহ-৪ সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।
জয়পুরহাট-২ আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, চাঁদপুর-১ মোশারফ হোসেন, চাঁদপুর-২ জালাল উদ্দিন, চাঁদপুর-৪ হারুনুর রশিদ এবং চাঁদপুর-৫ মমিনুল হক। জয়পুরহাট-১ তিতাস মোস্তফা, জামালপুর-২ সুলতান মাহমুদ বাবু, জামালপুর-৩ মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এবং জামালপুর-৫ ওয়ারেস আলী মামুন। মাদারীপুর-২ আল আমিন মোল্লা, মাদারীপুর-৩ আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, নেত্রকোনা-৩ রফিকুল ইসলাম হিলালী এবং নেত্রকোনা-৫ আবু তাহের তালুকদার।
গাইবান্ধা-১ মো. মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-২ মিহির ঘোষ, গাইবান্ধা-৪ কাজী মশিউর রহমান, গাইবান্ধা-৫ ফারুক আলম সরকার ও শহিদ রঞ্জু। ময়মনসিং-১ আফজাল এইচ খান, ময়মনসিংহ-৩ এম ইকবাল হোসেন, ময়মনসিংহ-৫ কে এম খালিদ ও জাকির হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ-৬ শামসুদ্দিন আহমেদ ও মোসলেম উদ্দিন, ময়মনসিংহ-৮ এ এইচ এম খালেকুজ্জামান ও ফখরুল ইমাম, ময়মনসিংহ-৯ খুররম খান চৌধুরী এবং ময়মনসিংহ-১০ সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ। হবিগঞ্জ-২ আফসার আহমদ রূপক, হবিগঞ্জ-৪ আহমদ আবদুল কাদের, দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম, শেরপুর-২ ফাহিম চৌধুরী, শেরপুর-৩ মাহমুদুল হক রুবেল, পাবনা-৪ হাবিবুর রহমান হাবিব, পাবনা-৫ হাফেজ ইকবাল হোসাইন এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহারুল ইসলাম মান্নান।
বাগেরহাট-১ শেখ মাসুদ রানা, বাগেরহাট-২ এম এ সালাম, বাগেরহাট-৩ আবদুল ওয়াদুদ শেখ, বাগেরহাট-৪ আবদুল আলীম ও সোমনাথ দে। ফেনী-১ মুন্সি রফিকুল আলম, ফেনী-২ জয়নাল আবেদীন, ফেনী-৩ আকবর হোসেন, ফরিদপুর-২ শামা ওবায়েদ, দিনাজপুর-৬ মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শরীয়তপুর-২ শফিকুর রহমান কিরণ, রাজশাহী-৪ আবু হেনা এবং যশোর-১ মফিকুল হাসান তৃপ্তি। যশোর-৫ মোহাম্মদ ওয়াক্কাস ও কামরুল ইসলাম বারী, টাঙ্গাইল-১ সরকার শহীদ, টাঙ্গাইল-২ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, টাঙ্গাইল-৩ লুৎফর রহমান খান আজাদ, টাঙ্গাইল-৪ লিয়াকত আলী, টাঙ্গাইল-৭ আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জন করেন।
যশোর-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেন। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন। যশোর-৪ বেশির ভাগ কেন্দ্রে আগের রাতেই ভোট কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে ওই আসনে ভোটগ্রহণ স্তগিতের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. জহুরুল হক। ওই আসনে ন্যাপ (ভাসানী) প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ভোট বর্জন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের ৬০ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ১৪টি কেন্দ্রে পুনঃভোটের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি প্রার্থীরা।
তিন বিএনপি প্রার্থী ভোট কেন্দ্রেই যাননি : অন্যায় আচরণ এবং এজেন্টদের মারধর ও বের করে দেওয়ার প্রতিবাদস্বরূপ চট্টগ্রামে বিএনপির তিন প্রার্থী ভোটকেন্দ্রেই যাননি। ভোটও দেননি। তারা হলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম-১১ আসনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী আবু সুফিয়ান।