সিরিয়া এবং ইরাকের আকাশে গোয়েন্দা তৎপরতায় নিয়োজিত অন্তত ৮ মার্কিন ড্রোনের পরিচালনা ব্যবস্থা হাতিয়ে নিয়েছে ইরান। এসব ড্রোন পরিচালনায় নিয়োজিত মার্কিন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সাইবার ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢুকে এ কাজ করা হয়েছে। এছাড়া, এসব ড্রোনের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নজরদারি করেছে এবং সে সব তথ্যও ইরানি বাহিনীর কাছে চলে এসেছে।
এ সব কথা জানিয়েছেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির বিমানমহাকাশ বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ।ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় নগরী হামেদান থেকে আরো জানান তিনি, সিরিয়া এবং ইরাকের আকাশে অব্যাহত টহলে নিয়োজিত সাত বা আট ড্রোনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে আইআরজিসি। এসব ড্রোন দিয়ে যোগাড় করা গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নজরদারি করা হয়েছে এবং এসব তথ্য হাতিয়েও নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি তার বক্তব্যের স্বপক্ষে ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেন। এতে দেখা যায় মার্কিন এক উড়ন্ত ড্রোন নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে আকাশে ঘুরতে থাকে। পরে মার্কিন ঘাঁটি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে এটি অবতরণ করে। এটি সে সময়ে কাদের পরিচালনায় রয়েছে তা বুঝে উঠতে না পেরে ড্রোনটির কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকে মার্কিন বাহিনী। পরে, বিমান পাঠিয়ে বোমা মেরে ড্রোনকে উড়িয়ে দেয় তারা।
বিশ্বে ড্রোন প্রযুক্তিতে অগ্রসর দেশগুলোর অন্যতম ইরান। ১৯৮০’এর দশকের ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় থেকে দেশটি ড্রোন বা চালকহীন বিমান তৈরি করছে। কিন্তু প্রায় এক দশক আগে এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে ইরান।
২০১১ সালে ইরানের সামরিক বাহিনী মার্কিন আরকিউ-১৭০ সেন্টিনিয়েল ড্রোন ভূপাতিত করে। পরিচালনা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের নিয়ে এসে একে প্রায় অক্ষত অবস্থায় ভূপাতিত করা হয়েছিল। এর কয়েকমাস পরে ইরান নিজস্ব প্রযুক্তিকে আরকিউ-১৭০ স্টিলথ ড্রোন তৈরি শুরু করে। মার্কিন ড্রোন কেবল গোয়েন্দা তৎপরতায় ব্যবহার করা গেলেও ইরানের তৈরি এ ড্রোনকে বোমা হামলার উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ইরান এ পর্যন্ত মার্কিন স্ক্যান ঈগল, র্যাপ্টর, এম-কিউ৯সহ প্রায় ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। পরিচালনা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার মাধ্যমে এগুলোকে আকাশ থেকে ইরানের মাটিতে নামিয়ে আনা হয়। এসব ড্রোন নির্মাণের প্রযুক্তি হাতিয়ে নিতে এবং তা দিয়ে নিজ ড্রোন তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছে ইরান।