muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

পাইলটের দক্ষতায় জরুরি অবতরণ, রক্ষা পেল ১৪৯ প্রাণ

শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করা দুবাইগামী ফ্লাইট ময়ূরাক্ষীতে সমস্যার শুরু হয় রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে। ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই অস্ত্রধারী এক ব্যক্তি পাইলটের ককপিটে প্রবেশের চেষ্টা করলে কেবিন ক্রুরা তাকে বাধা দেন। এরই মধ্যে একটি গুলির শব্দ শুনতে পান যাত্রীরা। পরে টালমাটাল বিমানটি বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।

পাইলটের দক্ষতায় বিমানটিতে থাকা সকল যাত্রীর প্রাণ বেঁচে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিমানটিতে ১৪৯ মতো যাত্রী ও কেবিন ক্রু ছিল বলে জানা গেছে। বিমানবন্দরে ওই মুহূর্তে অবস্থান করা একাধিক ব্যক্তি ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

এসময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছিলেন ওমানগামী ফ্লাইটের যাত্রী কাউছার। তিনি জানান, ‘তিনি ওমান প্রবাসী। আজ তার ফ্লাইট। তাই তিনি প্রয়োজনীয় সকল নিয়মাবলি পূরণ করেই বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। ছিনতাইয়ের কবলে থাকা বিমানটি যখন অবতরণ করে তখন তারা দ্বিতীয় তলায় ছিলেন। এর মাঝে পৌনে ছয়টার দিকে এ বিমানটি জরুরিভাবে অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের অফিস স্টাফদের বিমানটির কাছে ছুটে যেতে দেখেন।’

কাউছার বলেন, ‘প্রথমে ওই বিমানে ইমারজেন্সি এক্সিট দিয়ে কিছু যাত্রীকে বের হতে দেখি। পরে বিমানের সামনের দিকে মইয়ের মত কিছু একটা লাগিয়ে কয়েকজন পাইলটের জানালা বরাবর গিয়ে বেশ কিছু সময় কথা বলতে দেখা যায়। পরে উপরের একটি দরজা দিয়ে পাইলট বেরিয়ে আসেন। ’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রথম দিকে যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয় তখন আমিসহ অনেকেই নিচতলায় নেমে আসি। এসময় ওই বিমানের কয়েকজন যাত্রী বিমানে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান। তবে সবাই এক বাক্যে বলেছেন পাইলটের দক্ষতায় তারা বেঁচে ফিরেছেন।’

এদিকে দুবাইগামী ফ্লাইট ময়ূরপঙ্খীতে যাত্রী হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদল। তিনি সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভেতরে একজন হাইজ্যাকার আছে। তিনি বাঙালি। হাইজ্যাকার শুরুতে ককপিটে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু পাইলট কৌশলে তা হতে না দিয়ে বিমানের জরুরি অবতরণ করেন।’

এদিকে রোববার রাত পৌনে ৮টায় শাহ আমানত বিমানবন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমানবাহিনীর এয়ারভাইস মার্শাল মুফিত বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর যৌথ কমান্ডো অভিযানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবস্থানরত বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। যাত্রী ও ক্রু সবাই সুস্থ রয়েছেন। কেউ কোনো আঘাত পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক নির্দেশনায় এ অভিযান সফলভাবে পরিচালিত হয়।’

তিনি বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ওই ব্যক্তিকে টেলিফোনে ব্যস্ত রেখে বিশেষ কৌশলে অভিযান পরিচালিত হয়। ওই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তিনি সুস্থ নাকি মানসিক রোগী সে সম্পর্কে তদন্ত শেষে বলা সম্ভব হবে বলে জানান মুফিত।

এদিকে সেনাবাহিনীর স্পোশাল ফোর্স চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী গণসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। আইএসপিআর-এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Tags: