বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর হতে যাচ্ছে- এ সময় এসে দেশের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রমকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার এ কথা বলেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমকে দেয়া এক নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিটের শুনানিতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত।
একইসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমকে দেয়া নোটিশের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এবং ওই নোটিশের কার্যকারিতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে, স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পরও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আমরা এখনও যাচাই-বাছাই করে চলেছি, যে তারা শ্রেষ্ঠ কিনা!’
পরে আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের লাল মুক্তিবার্তায়, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রকাশিত গেজেট, প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত সনদ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাময়িক সনদ এবং চূড়ান্ত তালিকায় কুমিল্লার হোমনা থানার মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম প্রধানের নাম রয়েছে। একাধারে তিনি হোমনা থানা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বলেও গেজেট রয়েছে। এত কিছু থাকা সত্ত্বেও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আবুল কাশেমকে স্বশরীরে হাজির হয়ে তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দাখিল করতে নোটিশ দেন।
এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম হাজির হন। কিন্তু জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল তাদের নোটিশের পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ মার্চ পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন। পরে ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আবুল কাশেম।
আইনজীবী অমিত দাস গুপ্তের দাবি, ইতোমধ্যে গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের নাম প্রকাশ করার পরও মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে শুনানির জন্য ডেকে এনে শুনানি করতে পারেন না। কারণ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের নামের গেজেট প্রকাশ করেছে। তারপরও নোটিশ দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হেনস্থা করা হয়েছে।