মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ মানববতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে ট্রাইব্যুনাল ও আপিলে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রইলো।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার মুজাহিদের এবং আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় সাকা চৌধুরীরর রিভিউ শুনানি শেষ করা হয়। উভয়ের ক্ষেত্রে এক কর্মদিবসেরও কম সময় শুনানি গ্রহণ শেষে আদালত তাদের রিভিউ খারিজ করে দেন।
দণ্ড কার্যকরের আগে দুই যুদ্ধাপরাধীর শেষ আইনি সুযোগ ছিল এই রিভিউ আবেদন। এ আবেদন খারিজ হওয়ায় এখন তাদের সামনে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এর আগে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন একদিনের মধ্যে শুনানি শেষে খারিজ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাওয়ায় তাদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়।
কাদের মোল্লার রায়ের নজির অনুযায়ী, রিভিউ নিষ্পত্তির আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে যাবে। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ আসামিদের কাছে জানতে চাইবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবে কিনা। যদি আবেদন করা হয়, সেক্ষেত্রে আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে সরকারকে। আর আবেদন করতে না চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোনো সময় আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে।
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আলবদর প্রধান মুজাহিদকে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তার রায়ে সর্বোচ্চ আদালত শুধু বুদ্ধিজীবী হত্যার ষড়যন্ত্র ও ইন্ধনের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। বাকি দুটির একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্যটিতে খালাস দেন।
এ ছাড়া একই বছরের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাকা চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন।
এরপর দুই আসামিই ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ তাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড বহালসংক্রান্ত আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়।