নিজের বাড়িতে স্ত্রীকে পিটিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের হাতে মার খেয়ে আত্মগোপন আলোচিত হিরো আলম। তবে আত্মগোপনের আগে তিনি বগুড়া সদর থানায় তার ওপর হামলা হওয়ার পাল্টা অভিযোগ করেন। হিরো আলমের মারধরে আহত স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি বলেন, অনেক আগে থেকেই তার চারিত্রিক সমস্যা ছিল। সে একবার আমার ছোট বোনকে নিয়েও পালিয়েছিল। এখন নির্বাচন করে আলোচিত হওয়ার পর থেকেই সে বাড়িতে কম থাকে। সংসারের খোঁজখবর রাখে না। গত দুই মাস পর সোমবার রাতে হিরো আলম বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া গ্রামে তার বাড়ি আসে।
রাতে বিছানায় শুয়ে আমি পাশে থাকতেই একটানা তিন ঘণ্টা মোবাইল ফোনে ঢাকার এক নারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকে। এ নিয়ে আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে পিটিয়ে আহত করে।
সাদিয়া বেগম সুমি অভিযোগ করে জানান, হিরো আলম ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছে বলে শুনেছি। এ কারণে বগুড়ায় থাকা স্ত্রী-সন্তানের কোনো খবর রাখে না এবং সংসার খরচ দেয় না। এর প্রতিবাদ করলেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের ওসি বদিউজ্জামান জানান, গত মঙ্গলবার রাতে হিরো আলমকে পেটানো হয় বলে তিনি বগুড়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জেরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তার শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমির নেতৃত্বে হিরো আলমের বাড়িতে এসে চড়াও হয়ে তাকে পেটানো হয়। পরে হিরো আলম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে স্ত্রী-শ্বশুরসহ পাঁচজনের নামে অভিযোগ দেন।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুর রহিম জানান, আমরা প্রথমে হিরো আলমের কথাই সত্যি ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে তদন্ত করে জানা গেছে হিরো আলমই প্রথমে তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে পিটিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই হিরো আলম আত্মগোপণে। তার ফোনও বন্ধ।
হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তার মেয়েকে আবারও নির্যাতন করা হয়েছে বলে তিনি খোঁজ পান। নির্যাতনের খবর পেয়ে মেয়ের বাড়ি যান তিনি। মেয়েকে উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন আমি আমার মেয়েকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবো। সে পরকীয়া এবং দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
এ ব্যাপারে এরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মন্ডল বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম হিরো আলমের চরিত্র ভালো না। এর আগে তার শালিকে নিয়ে ভেগে যাওয়ার বিচার আমিই করেছিলাম। এখন স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা এবং পরকীয়াসহ দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনার খবর এলাকার মানুষের মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় ছি: ছি: রব উঠেছে।’
বুধবার সকাল থেকে একাধিকবার হিরো আলমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়া এরুলিয়া বাজারে তার অফিস এবং বাড়িতে গিয়েও তার সন্ধান মেলেনি।