মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আসামিকে দেয়া জামিন সংক্রান্ত আদেশ অধস্তন আদালত এখন থেকে অনলাইনেই জানতে পারছে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জানান,
বিচার বিভাগকে ডিজিটাইজেশন করার অংশ হিসেবে উচ্চ আদালতে দেয়া জামিন আদেশ নিশ্চিত করার কাজটি অনলাইনে শুরু হয়েছে চলতি মাসে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আদালতের সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের কার্যক্রম চলছে। আর অনলাইনে জামিন সংক্রান্ত তথ্য সেই পদক্ষেপেরই অংশ।
বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী নিম্ন আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলায় আসামির জামিন আবেদন না-মঞ্জুর হলে ওই আসামি উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানি শেষে আসামি জামিন পেলে অধস্তন যে আদালতে মামলা চলছে সেই আদালতকে সুপ্রিম কোর্ট চিঠি দিয়ে (স্বারক নম্বরসহ) সরকারি ডাকে বিষয়টি জানায়। চিঠিটি আসলেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো কীনা সেটি সংশ্লিষ্ট শাখায় ফোন করে নিশ্চিত হয় অধস্তন আদালত। ফলে জামিন বিষয়ে নিশ্চিত হতে সারা দেশের আদালত থেকেই সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় টেলিফোনে যোগাযোগ করতে হতো। চিঠির বিষয়টি উচ্চ আদালত থেকে নিশ্চিত হওয়ার পর অধস্তন আদালত নিয়ম অনুযায়ী জামিননামা গ্রহণ করে আসামিকে কারাগার থেকে মুক্তির ব্যবস্থা নিতো। এ প্রথায় অনেক সময় নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছিল। অনেক ক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছিল এবং এক্ষেত্রে নানা অনিয়মও পরিলক্ষিত হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ সেবাটি আরো সহজ ও স্বচ্ছ করতে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সে অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রিসার্স ও রেফারেন্স শাখা অফিসার মো. শামীম সুফী এবং আইটি বিভাগের প্রধান সিস্টেম অ্যানালিস্ট কাজী পারভেজ আনোয়ার বিশেষ একটি সফটওয়ার ডিজাইন করেন। যেখানে একজন অপারেটর হাইকোর্ট বিভাগের প্রতিটি জামিনের আদেশ স্ক্যান করে আপলোড করেন। আপলোডকৃত আদেশের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ওয়েব রেফারেন্স নম্বর তৈরি হয়, যা জামিনের আদেশে রেফারেন্স নম্বরটি সিল মেরে রেখে দেয়া হয় এবং চলে যায় অধস্তন আদালতে। অধস্তন আদালত সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইন থেকে সংশ্লিষ্ট জামিনের আদেশটি খুঁজে বের করেন। ওয়েবসাইটে পাওয়া জামিন আদেশের সঙ্গে পাঠানো চিঠির মিল থাকলে আসামিকে মুক্তি দেবেন সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ। ফলে টেলিফোনে আর জামিন আদেশ নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।
বর্তমান সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের প্রভাব এখন সর্বত্র। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতেও ডিজিটাল কার্যক্রম নিশ্চিত করা হচ্ছে ।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলামকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কার্যতালিকা ১ নভেম্বর থেকে অনলাইনে প্রদর্শন কার্যকর হয়। তিনমাস পরীক্ষামূলকভাবে ছাপা ও অনলাইন কার্যতালিকা একসঙ্গে চালু থাকবে। এরপর কাগজে কার্যতালিকা ছাপা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটকে আরো সমৃদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মামলা নিস্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য ও সংবাদ এখন সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে অনলাইনে (নিউজ আপডেট) দেয়া হচ্ছে।