মুসলিমরা তাদের জীবন নিয়ে সবচেয়ে তৃপ্ত হন। এর কারণ হিসেবে এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, অন্য ধর্মের মানুষদের চেয়ে মুসলিমদের মধ্যে ‘একতাবোধ’ বা পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অনুভূতি বেশি থাকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানায়, ‘সুখ’- এর পরিমাণ নির্ধারণের জন্য এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে কার্যকরি উপায় হচ্ছে জীবনে তৃপ্তি বা সন্তুষ্টির পরিমাণ মাপা।
এক জার্মান মনস্তাত্ত্বিক তার নতুন গবেষণায় দেখিয়েছেন, মানুষের ‘একতাবোধ’ বা সম্পৃক্ত থাকার অনুভূতি থেকে সামগ্রিক তৃপ্তি অনুমাণ করা যায়।
এর ভিত্তিতে গবেষকরা বিভিন্ন ধর্মের ৬৭ হাজার ৫৬২ জনকে পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তাদেরকে ধর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করলে দেখা যায়, মুসলিমদের মধ্যে একতাবোধ বেশি।
ধর্ম, দর্শন এবং মনস্তত্ত্বসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্নভাবে মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তা সামগ্রিকভাবে মানুষের ভালো থাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
অবশ্য সুখ কী এবং কিভাবে এটা লাভ করা যায়, তা মনস্তত্ত্বের অধ্যয়নেও ‘বিরাট প্রশ্ন’। এর উত্তরও সবার জন্য এক হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু, ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়ের অধ্যাপক ড. এড ডাইনার সুখের মাপকাঠি ‘Satisfaction with Life Scale’ (SWLS)’ বা ‘জীবন নিয়ে সন্তুষ্টি’ তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন মনস্তাত্ত্বিকদের মধ্যে।
ড. ডাইনারের মানদণ্ডে পাঁচটি প্রশ্ন রয়েছে, যা থেকে অনুমাণ করা যায় একজন মানুষ তার জীবন নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?
সম্প্রতি জার্মানির ইউনিভার্সিটি অফ মানহাইমের গবেষকরা একতাবোধ কিভাবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে, তা বের করার পরিকল্পনা করেন।
এই উদ্দেশ্যে ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর জরিপ চালান তারা। এই লোকগুলো মানুষের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত এবং তারা জীবন নিয়ে কতটা তৃপ্ত সেটি জানতে বিশেষ ধরনের প্রশ্ন তৈরি করেন গবেষকরা।
নতুন গবেষণাটিতে দেখা যায়, সব গ্রুপের মানুষের মধ্যে মুসলিমরা মনে করেন, তারা নিজেদের চেয়ে বৃহত্তর একটা কিছুর সঙ্গে সংযুক্ত। আমেরিকান সাইকোলজি অ্যাসোসিয়েশনে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।
মুসলিমদের পর এ রকম একতাবোধের ধারণা রয়েছে সেই সব খ্রিস্টানদের মধ্যে, যারা নিজেদের ক্যাথলিক বা প্রটেস্টান্ট মনে করেন না। একতাবোধে এর পরের অবস্থানে রয়েছে বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের অনুসারিরা। আর অন্যদের বা উচ্চতর কিছুর সঙ্গে সবচেয়ে কম থাকার অনুভূতি রয়েছে অজ্ঞেয়বাদীদের মধ্যে।
ফলাফলের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, গবেষকদের তৈরি গাণিতিক মডেলটি একতাবোধ এবং জীবনে সন্তুষ্টির মধ্যে যে একটা শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, তা নিশ্চিত করেছে।