কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার ১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও পাওয়া গেছে সোনা, রূপা ও বৈদেশিক মুদ্রা।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
এরপর এসব বাক্স থেকে পাওয়া নগদ টাকা বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় স্তূপ করা হয়। মসজিদ কমপ্লেক্সের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ শহরের রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা গণনা শেষে বিকেল ৫টায় টাকার হিসাব পান।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফুল আলম, মোছা. আকলিমা বেগম ও সাগুফতা হকসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় নগদ ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ টাকা এবং বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রুপার অলংকার।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, তিন মাস পরপর মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার দুই মাস ২৪ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। পরে টাকাগুলো গুনে নগদ ১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া যায়। আর যে স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে তা আগের স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে যোগ করে সিন্দুকে রেখে দেওয়া হয়েছে।
রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এই মসজিদের যখন দানবাক্স খোলা হয়, তখন সাধারণত এক কোটি টাকার কাছাকাছি বা কোটি টাকার বেশি পাওয়া যায়। এবারও ১ কোটি টাকার উপরে পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন। দানবাক্সে পাওয়া টাকা সাধারণত কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলদের পরামর্শে বিভিন্ন মসজিদে দান-খয়রাত, মাদ্রাসার উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়ে থাকে।