কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের সংগ্রামী নেতা গঙ্গেশ সরকারের প্রয়াণ দিবস নিরবে নিভৃতে পারিবারিকভাবে পালন করা হয়েছে।
জানা যায়, আজীবন সংগ্রামী প্রয়াত গঙ্গেশ সরকারের ২৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী রবিবার (১৪এপ্রিল) পারিবারিক ভাবে বিভিন্ন আনুষ্টানিকতায় পালিত হয়। জননেতা গঙ্গেশ সরকার ছোটবেলা থেকেই দেশ এবং জাতির কল্যানে নিজেকে ঊৎসর্গীত করেন। তৎকালীন বৃটিশ বিরোধী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের লড়াকু সংগঠন “যুগান্তর”এর স্হানীয় প্রভাবশালী নেতা নিরোধ চক্রবর্ত্তীর সান্নিধ্যে গোপন রাজনীতির সাথে “কূরিয়ার” বার্তাবহ হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে কমিউনিষ্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে প্রথম কারাগারে যান। ১৯৪৮ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালিন পাকিস্তান বিরোধী ” এ আজাদী ঝুটা হ্যায় – লাখো নিশান ভূখা হ্যায় ” আন্দোলনের সৈনিক হিনেবে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন ৫৪’র যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে আত্বগোপনে থেকেও ১৯৫৬ সালে ৯২ (ক) ধারামতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। ১৯৫৭ সালে মাওলিনা ভাসানির নেতৃত্বে ন্যাপে যোগ দেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুবের সামরিক শাসন আমলে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় আবার গ্রেফতার হন। ১৯৬৭ সালে ওয়ালী খান – মোাফফর আহম্মদের নেতৃত্বে গঠিত রিক্যুইজিশন ন্যাপে একাত্ব হলে ন্যাপের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ এর গন অভ্যুত্থান, ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের বলিষ্ঠ সংগঠক হিসেবে বিশাল দ্বায়িত্ব পালন করেন। ৭০ এর দশকে ভিসি – চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাষনামলে তিনি প্রায় দেড় বছর একটানা ময়মনসিংহ জেলে অন্তরিন ছিলেন। ৮০’র দশকে সোভিয়ত সরকারের আমন্ত্রনে রাশিয়া সফর করেন। জননেতা গঙ্গেশ সরকারের সূদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অধ্যাপক মোজাফফর আহম্মদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা ভাসানী, জ্যোতি বসু, ত্রৈলোক নাথ চক্রবর্তী, মহারাজ, মনি সিংহ প্রমূখের সাহচর্যে এসেছেন।
গোটা জীবনে রাজনীতিই যার একমাত্র পরিচয় আপোষহীন বিপ্লবী জননেতা প্রয়াত গঙ্গেশ সরকারের ২৪ তম প্রয়ান দিবস নিরবে নিভৃতে চলে গেলো।
এলাকার মুরুব্বীদের সাথে কথা হলে বলেন, সংগ্রামী জননেতা গঙ্গেশ সরকারের জীবনী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এখনই সময়।নইলে এই কিংবদন্তির নাম মুছে যাবে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্তের বেড়াজালে।