ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার পর পুরো দেশ যখন ফুসে উঠেছে তখন নিজের ওপর নির্যাতনের বিচার চাইলেন কণ্ঠশিল্পী মিলা ইসলাম। বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, তাকে নগ্ন অবস্থায় বাথরুম থেকে বের করে নির্যাতন করা হয়।
ফেসবুকে মিলা বলেন, কত কত জীবিত “নুসরাত” আইনের কাছে দাঁড়ান দিনের পর দিন। কিন্তু না মেরে ফেলা পর্যন্ত তাদের জন্য কোনও আওয়াজ উঠবে না। আইন দেশের সুন্দর…দুই বছর হয়ে যাচ্ছে। কোর্টে উল্টো জঘন্যভাবে চিৎকার দিয়ে অপবাদ দেয়া হয় আমাকে। বিচার তো দূর, দাখিল করা “খ” ধারার চার্জশিট আমাকে না বুঝতে দিয়ে “গ” ধারায় মামলা চার্জ গঠন করা হয়।”আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। আমার জানা ছিল, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় কোন রকমের হস্তক্ষেপে নেত্রীর কঠোর নিষেধ রয়েছে। তিন বার আদালতের আদেশ টানা অমান্য করলে জামিন বাতিল হওয়ার কথা। পাঁচবার আমাকে কোর্ট নানান বুঝ দিয়ে পার্মানেন্ট জামিন দেয়।”
মিলা অভিযোগ করেন, আমি এখন বলতেও পারি নাই শেষের দিন আমার শাশুড়ি, আমার স্বামীর কথায় আমাকে কিভাবে বাথরুম থেকে দরজা ভেঙে বিনা কাপড় পরিহিত অবস্থায় জঘন্যভাবে টেনে আমার দেবর তার স্ত্রী এবং তার স্ত্রীর বাবা মায়ের সামনে এক ঘণ্টা গালিগালাজ করতে থাকে। আমার বাবা ‘Viber’ এ ভিডিও কলের মাধ্যমে পুরাটা ঘটনা দেখে। এক পর্যায়ে আমি হাত জোড় করে ভিক্ষা চাই এই বলে “আম্মু আমাকে মেয়ে বলে নিয়ে আসছিলেন। আমার গায়ে কাপড় নাই। দয়া করে আমাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে যা বলার বলেন। কিন্তু এই অপমান করেন না”। ভিডিওটা এখনও আমার কাছে।
জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী আরও বলেন, দেশের শিল্পী আমি? আজকে এইটাও বলে ফেললাম। এর চাইতে কাপড় পড়া অবস্থায় আমার গায়ে আগুন দিয়ে দিত। আমি যাই বললাম তাতে পুরো মিডিয়া, শিল্পীরা, আমার ভোক্তরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার কথা। কাপড় ছাড়া ওই ছেলেকে রাস্তায় নামিয়ে জুতার বাড়ি দিয়ে মারার কথা, তাই না? আমার এই পোস্টটাই তো সবার শেয়ার করার কথা তাই না? কেউ করবে নাহ, কেউ নাহ। কারণ আমি বেঁচে আছি। এই মিলা কেন এখনও প্রতিদিন চিৎকার করে কাঁদে উত্তর পাও তোমরা? আমি দেশের জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী? এ সময় মিলা একটি বেসরকারি বিমান সংস্থাসহ সেখানে কর্মরত আরও দু’জন পাইলটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
পরে মিলা আবার বলেন, আমি আমার দেশ ও দেশের সরকার এর কাছে আমার ভেঙে দেয়া মেরুদণ্ড ফিরে চাই। ফাইলের উপর ফাইল করা সকল প্রমাণ আমার কাছে জমা। কিন্তু বাকিদের বিচার কই চাইব? এদিকে ওই ছেলে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য বিভিন্ন বিদেশি এয়ার লাইনে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমার আবেদন আমার নেত্রীর কাছে, আমার অপরাধী যাতে পালাতে না পারে। আমার মামলাটি দয়া করে আবারো সঠিক ধারায় চার্জ গঠন করার আর্জি জানাই। গত দশ দিন আগে আমি ওই ছেলেকে হাতেনাতে পতিতা নিয়ে ধরলে ওই ছেলে আমাকে “গুলি করে হত্যা করে সেলফ ডিফেন্স বলে প্রমাণ করে দিবে” বলে আমাকে আর আমার বাবাকে sms করে। গুলি খাওয়ার আগে বিচার চাই, বিচার চাই, আমি বিচার চাই।
সবশেষে নিজেকে একজন জীবিত নুসরাত দাবি করেন মিলা।