মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ বাংলাদেশের ভেতরে থাকা সাবেক ভারতীয় ছিটমহলগুলো থেকে যেসব বাসিন্দা ভারতে স্থায়ীভাবে চলে যেতে চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৭২ জন আবার মত পরিবর্তন করে বাংলাদেশেই থেকে যেতে আবেদন করেছেন।
ভারতে চলে যেতে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে আজই ছিল বাংলাদেশ ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন।
এই মত-পরিবর্তনকারীরা বলছেন, তাঁরা জন্মভূমি ছেড়ে চলে যেতে চান না।
কর্মকর্তারা জানান, দু’দেশের মধ্যে করা চুক্তিতে এ ধরণের ছিটমহলবাসীদের ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই।
অগাস্টের শুরুতে বাংলাদেশ আর ভারত ছিটমহলগুলো বিনিময় করলেও মানুষের আসা-যাওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০শে নভেম্বর।
ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের ছিটমহল থেকে কেউই নিজের দেশে ফিরতে চাননি।
তবে বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ছিটমহলগুলো থেকে ভারতের মূল-ভূখণ্ডে ফিরতে চেয়েছিলেন ৯৭৯ জন।
কয়েক দফায় এদের বেশীরভাগই ভারতে চলে গিয়েছেন।
কিন্তু শেষ মূহুর্তে মত পরিবর্তন করেছেন বাহাত্তর জন।
এদের একজন মনমোহন বর্মণ। ৬৯-বছর বয়সী এই কৃষক থাকেন কুড়িগ্রামের দাশিয়ারছড়ায়।
তিনি বলেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ভারতে নাম দেওয়ার পর আমার স্ত্রী ছেলে বলেছে যে তারা যাবে না। ছেলেটা বলেছে আমার মৃতদেহ দেখে আপনাকে যেতে হবে। তারা আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছে। জন্মভূমি ছেড়ে তারা যেতে চায় না।”
মনমোহন বর্মণ মত-পরিবর্তনের বিষয়টি ভারতীয় কর্মকর্তাদেরও জানিয়েছেন।
ভারতে যারা গেছেন, তাদের অস্থায়ী শিবিরে রাখা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহলের ১৩ জন মত পরিবর্তন করেছেন। আর কুড়িগ্রামের ৫৯ জন।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোহাম্মদ নূরুল আমীন বলছেন, অনেকে একেবারে শেষ মূহুর্তে মত পরিবর্তন করেছেন।
ভারত ভাগ হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ৬৮ বছর ছিটমহলগুলোর বাসিন্দারা কার্যত বন্দী জীবন কাটিয়েছেন।
যে দেশের নাগরিক ছিলেন, বলা যায় সেখানকার নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন তাঁরা।
এখন আবার যারা মত পরিবর্তন করে ভারতে যেতে চাইছেন না, তাদের বিষয়টির সমাধান কীভাবে হবে, তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিবিসিকে বলেন, বিষয়টির খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।