পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আওতাধীন গ্রিন সিটি প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনা ও উঠানোয় অনিয়মের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন।
গতকাল রোববার দায়ের করা রিটে আজ সোমবার (২০ মে) দুপুর ১টার দিকে শুনানি শুরু হয়। রিটকারী আইনজীবী সুমন যখন বালিশ ও কেটলি ওঠানোর খরচের বিষয়টি আদালতে তুলে ধরছিলেন তখন বিচারপতিরা হাসছিলেন।
রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পাবনার গণপূর্ত অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী জানান, ১২৫টি ফ্ল্যাটের মালামাল কিনতে ও উঠাতে ২৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, যা প্রত্যেক ফ্ল্যাটের জন্য খরচ পড়ে ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকার মতো। এ মামলার শুনানিতে ভিড় করেন উৎসুক আইনজীবীরা।
রোববার (১৯ মে) আংশিক শুনানির পর সোমবার (২০ মে) রিটের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। এদিকে ভবনের আসবাবপত্র কেনা ও উঠানোয় অস্বাভাবিক খরচ তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, একেকটি বালিশ কিনতে খরচ পড়েছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। এই বালিশগুলোকে নিচতলা থেকে ওপরে ওঠাতে খরচ পড়েছে প্রায় নয়শো টাকা। আমরা এখনই দুর্নীতির কথা বলছিনা। তবে এরকম অস্বাভাবিক খরচের জুডিশিয়াল তদন্ত দরকার।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ভবনের আসবাবপত্র ক্রয় ও প্রাসঙ্গিক খরচ উল্লেখ করে সম্প্রতি পত্রিকায় দরপত্র প্রকাশিত হয়। এতে ২০তলা ভবনের ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয় ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। আর ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। এছাড়া একেকটি খাট ফ্ল্যাটে ওঠানোর খরচ দেখানো হয় ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা করে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, এ ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।