muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

কিশোরগঞ্জে গণধোলাইয়ের শিকার পুলিশের দুই এসআই

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সজিব নামে এক শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন থানা পুলিশের দুজন এসআই। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পিতাসহ ৫ জনকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১ জুন) রাত ৮টার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের শুম্ভুপুর পাক্কার মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত দুই এসআই হলেন- আবুল খায়ের ও এসআই আজিজুল হক। এদের মধ্যে এসআই আবুল খায়ের সবচেয়ে বেশি মারপিটের শিকার হয়েছেন।

শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, মদের বোতল দিয়ে শিক্ষার্থী সজিব মিয়াকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে পুলিশ। সে শম্ভুপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। সজিবের বাবা একজন মুদি দোকানি।

পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক শহরের চান্দ ভান্ডারের সামনে থেকে মদের বোতলসহ মোটরসাইকেল আরোহী সজিবকে আটক করে। পরে মোটরসাইকেলে সজিবকে থানায় নেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু সজিব কৌশলে মোটরসাইকেল নিয়ে দুর্জয় মোড় থেকে সজোরে পাক্কার মাথায় চলে যায়। এ সময় সজিবকে হাতকড়া পরাতে চাইলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে স্থানীয়রা এবং সজিবের পরিবারের সদস্যরা জানান, মোটরসাইকেল নিয়ে সজিব তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সন্ধ্যায় ঈদের নতুন জামা কিনতে বাজারে যায়। পরে তাদের চান্দ ভান্ডারের সামনে আটকে সজিবের গায়ে মদ ছিটিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করে পুলিশ। পরে সজিব মোটরসাইকেল নিয়ে তার মহল্লা শহরের পাক্কার মাথা চলে আসে। তাদের পিছু নেয় ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক। পরে সজিবকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যেতে চাইলে, বিষয়টি স্থানীয়দের চোখে পড়ে। এ সময় এসআই আবুল খায়েরের গায়ে পুলিশের পোশাক না থাকার কারণে ছিনতাইকারী ভেবে তাদের গণধোলাই দেয়।

খবর পেয়ে ভৈরব থানার এসআই মোখলেছুর রহমান রাসেল ও অভিজিৎ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবুল খায়েরকে উদ্ধার করে। একই সাথে পুলিশের ওপর হামলার দায়ে ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সেহরি খাওয়ার সময় সজিবের বাবা মো. সাব মিয়াকেও আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকে বাড়ি ছাড়া রয়েছে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের ও আজিজুল হক জানান, শনিবার রাতে সজীবকে সন্দেহ হলে তাকে আমরা তল্লাশি করি। এ সময় তার সাথে একটি মদের বোতল পাওয়া যায়। পরে সজীবকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে সে কৌশলে মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় চলে যায়। পরে তাকে আটক করতে গেলে স্থানীয়রা ভুল বুঝে অপ্রীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে।

এ প্রসঙ্গে ভৈরব থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, স্থানীয়দের সাথে গতকাল একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। আসলে সজিবকে মদের বোতলসহ আটক করা হয়। পরে সে মোটরসাইকেল নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।

এ ব্যপারে ভৈরব সার্কেলের এএসপি মো. রেজুয়ান দীপু বলেন, রাতের ঘটনাটি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও কাউকে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে দেয়া হবে না।

আরো পড়ুন : কিশোরগঞ্জে ‘গণধোলাইয়ের শিকার’ সেই দুই এসআই ক্লোজ

Tags: