বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারানোর দিনে ওভালের মাঠে হাজির ছিল কয়েক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি। বিশ্বকাপ কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এবারের বিশ্বকাপের ৪০ শতাংশ টিকিট কিনে নিয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রবাসীরা।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডসের সদস্য জিতেশ গাধীয়া মনে করেন, নিজ দেশের প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসীদের এই বিপুল সমর্থনের কারণেই এক সময় অভিবাসনের ক্ষেত্রে ‘ক্রিকেট টেস্ট’ রাখার প্রস্তাব উঠেছিল।
রক্ষণশীল দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট নরম্যান তেব্বিত এক সময় প্রস্তাব তুলেছিলেন ব্রিটেনে অভিবাসন নিতে হলে আবেদনকারীদের ‘ক্রিকেট টেস্ট’ নেওয়া হবে। এর উদ্দেশ্য ছিল, ক্রিকেট খেলায় নিজ দেশের সঙ্গে খেলা হলেও ইংল্যান্ডকে সমর্থন দিতে হবে অভিবাসীদের।
হাউজ অব লর্ডসের সদস্য জিতেশ গাধীয়া বলেন, নরম্যান তেব্বিত ১৯৯০ সালে যখন এই মন্তব্য করেছিলেন তখনকার যুগ পর্যন্ত বিশ্বস্ততার প্রশ্ন ছিল, আর সামাজিক সংহতির অগ্রগতিও ছিল কম। আমরা জানি যে, দেশপ্রেমিক ব্রিটিশ নাগরিকদের মধ্যে অভিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও রয়েছেন- একইসঙ্গে তারা নিজেদের ঐতিহ্য নিয়েও গর্ববোধ করেন। গাধীয়া বলেন, ‘রাণী এবং ইংরেজি ভাষার চেয়ে রফতানি হওয়া দেশগুলোতে ক্রিকেটই সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি রাখে’।
এবারের বিশ্বকাপে যে ১০টি দেশ অংশ নিচ্ছে তার ৯টি কমনওয়েলথভুক্ত। অর্থাৎ, এসব দেশ এক সময় ব্রিটিশ উপনিবেশের অংশ ছিল। বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে গাধীয়া বলেন, দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক রুপায়ণের ক্ষেত্রে ক্রিকেট বিশাল ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, ১৯৫২-৫৩ সালের টেস্ট সিরিজের পর থেকে চরম উত্তেজনার সময়েও ক্রিকেট পিচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। ভারত ও পাকিস্তানের জন্য ক্রিকেট এক সাধারণ আবেগ, আর এ দুই দেশের যোগাযোগের এক ফলপ্রসূ চ্যানেল হয়ে উঠেছে ক্রিকেট।
ভিন্ন ভিন্ন মানুষ আর বিশ্বাসীদের ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ক্রিকেটের ভূমিকার প্রশংসা করেন গাধীয়া। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ খেলা ১০টি দেশের পাঁচটি দেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর বাংলাদেশসহ তিনটি দেশে মুসলিমরা। গাধীয়া বলেন, ‘ক্রিকেট বিশ্বকাপ মাঠে উত্তেজনা ও নাটকীয়তার প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু একইসঙ্গে তা দেশ ও বিশ্বাসের সীমানা পেরিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে’।