ক্রিকেট খেলা পুরোটাই মানসিকতার। শক্ত ভীত ও বুকভরা আত্মবিশ্বাস থাকলে ২২ গজে কাজগুলো খুবই হয়ে উঠে সহজ। তখন খেলা আর খেলা থাকে না। হাসতে হাসতেই অনেক কাজ হয়ে যায়।
একবার সাকিবের কথাই ভেবে দেখুন। বিশ্বকাপে নামার আগে কতো কথা হয়েছিল সাকিবকে নিয়ে। অথচ মাঠের ক্রিকেটে সাকিব ভিন্ন। বাইরের কোনো কথাতেই যেন কর্ণপাত করছেন না। পাফরম্যান্স করছেন আপন ছন্দে। বিশ্বমঞ্চে সাকিবের থেকে যে পাফরম্যান্সের প্রত্যাশা করছিল দল, তার পুরোটাই দিতে পেরেছেন। মুশফিকুর রহিমের থেকে মিলেছে ফিফটি-ফিফটি। অপেক্ষায় মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ ও তামিমের পারফরম্যান্স।
বাকিদুজনের থেকে মাশরাফির পারফরম্যান্স নিয়ে একটু বেশি আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার থেকে সমালোচনাই হচ্ছে বেশি। বিদেশি গণমাধ্যম আজ তো তাকে প্রশ্নই করেছে, দলের আপনার ভূমিকা? আপনি তো আপনার কোটার ওভার শেষ করছেন না? মাশরাফি অবশ্য তার প্রশ্নে হতাশ হননি। বরং উত্তর দিয়েছেন ফ্রন্টফুটে এসে। বুঝিয়েছেন, ম্যাচের পরিস্থিতি, কন্ডিশন কিংবা পরিকল্পনার কারণে তার ওভার শেষ হয়নি।আবার প্রতিদিন তার ভালো হবে সেই নিশ্চয়তাও নেই। তবে দলের হয়ে ভালো করতে তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন আপ্রাণ। সাধ্যের সবকুটু উজার করে দিতে চান সবুজের গালিচায়।
‘শেষ চার-পাঁচ বছরে অধিনায়ক থাকা অবস্থায় অনেক সময় এমন হয়েছে যে আমি আমার বোলিং শেষ করিনি। এটা নতুন নয়। প্রথম দুই ম্যাচে মোসাদ্দেক ভালো বোলিং করেছে। তার কাছ থেকে সেরাটা বের করা ছিল আমাদের পরিকল্পনা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমি আমার কাজটা করেছি। আসলে বোলিংয়ের পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে আপনি ম্যাচ ডে’তে কেমন করছেন। আমার পুরো ওভার শেষ করার পেছনে আর কোনো কারণ নেই। ’
‘এ ধরণের প্রশ্নে আমি একেবারেই হতাশ নই। আপনি যখন পেশাদার জীবনে থাকবেন, যখন সেরাটা দিতে পারবেন না আপনাকে এই ধরণের প্রশ্ন করা হবে এটা খুবই স্বাভাবিক। খারাপ সময় ভালো সময়ের পার্থক্য একেকজন একেকভাবে প্রকাশ করে। আল্টিমেটলি আমার কাছ থেকে আমি নিজেও আরও বেশি প্রত্যাশা করি। সেটা না হলে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি। মানুষ কি বলল সেটা থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমি নিজে কি অনুভব করছি। সেরাটা দিতে না পারলে তো আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগবে।’ – বলেছেন মাশরাফি।
অফফর্মে থাকা তামিমের রান পাওয়া না পাওয়া নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন মাশরাফি। অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন শেষ চার বছরে তামিমের অবদানের কথা। স্পষ্ট বলেছেন, ভাগ্যে না থাকলে তামিম পাবেন না রান বিশ্বকাপের পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও।
‘শেষ তিন-চার বছরে দলের সেরা ব্যাটসম্যান তামিম। গত তিন ম্যাচে ওর সার্ভিস আমরা পাইনি। আমি নিশ্চিত ওরই সবচেয়ে খারাপ লাগছে। আমি নিশ্চিত যে সে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে কোনভাবে রান পাবে। আর ভাগ্যে থাকলে রান পাবে। যতই চেষ্টা করুক ভাগ্যে না থাকলে সম্ভব না। আমি ব্যাপারটাকে খুব সহজভাবে দেখি। বিশ্বকাপে তার গড় ২৩, পরের ছয় ম্যাচ খেলে শুধুই ২৩ রানও করতে পারে। তার ভাগ্যে এটাই লেখা থাকলে কেউ বদলাতে পারবে না।’ – তামিমকে নিয়ে মাশরাফি।